মেলান্দহে চাঁদা না দেওয়ায় প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার অভিযোগ

প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুর রহমান

মাহমুদুল হাসান মুক্তা
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের মেলান্দহে চাঁদা না দেওয়ায় এক প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। ২ এপ্রিল সকালে ঝাউগড়া ইউনিয়নের পূর্ব ঝাউগড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষক মো. শহিদুর রহমান (৬০) পূর্ব ঝাউগড়া এলাকার মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে। তিনি ঝাউগড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

জানা যায়, ১ এপ্রিল রাতে প্রধান শিক্ষক শহিদুর রহমানকে ইফতারের দাওয়াত দিতে যান তার ভাতিজা হাফিজুর রহমান রিপন। এ সময় রিপন ও তার বাবা হাতেম আলী কারমলা ওই প্রধান শিক্ষকের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। প্রধান শিক্ষক চাঁদা না দেওয়ায় ও দাওয়াত গ্রহণে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে ভাতিজা রিপন ও তার বাবা হাতেম আলী কারমলা তাকে লাঞ্ছিত করেন। এরই জের ধরে ২ এপ্রিল সকালে মৃত আবুল কাশেম মেম্বারের ছেলে হাতেম আলী কারমলা, তার ছেলে হাফিজুর রহমান রিপন, সোলায়মান হোসেন বাবলু ও তার ছেলে সজিব, সিহাব, সিজান ও মৃত হাতেম আলী সুরুজের ছেলে তুষারসহ বেশ কয়েকজন মিলে প্রধান শিক্ষক শহিদুর রহমানের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে ওই প্রধান শিক্ষক ও তার ভাতিজা শাহজাহান সাজুর ছেলে মাহফুজ গুরুতর আহত হন। তারা দুজনই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

আহত প্রধান শিক্ষক শহিদুর রহমান বলেন, ১ এপ্রিল সন্ধ্যায় ইফতারের পর এক দোকান ঘরের সামনে আমি বসেছিলাম। ওই সময় হাতেম আলী কারমলার ছেলে হাফিজুর রহমান রিপন আমাকে ইফতারের দাওয়াত দিতে আসেন এবং মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিয়ে দাওয়াতে যেতে আমি অনীহা প্রকাশ করলে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। এ সময় তারা আমার ওপর উত্তেজিত হয়ে আমাকে ও আমার ছোটভাই শাহজাহানকে লাঞ্ছিত করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে সমাধানে আসেন এলাকাবাসী। পরদিন ২ এপ্রিল সকালে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার ছোটভাই শাহজাহানের বাড়িতে আমার বাড়ির কাজের জন্য বাঁশ কাটতে গেলে তারা আমার ওপর দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা করেন। হামলায় আমি ও আমার ভাতিজা মাহফুজ আহত হই।

তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, তারা ২ এপ্রিল সকালে শহর থেকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে তাদের বাড়ির সামনে বসে ছিল। ওই পথেই আমার বিদ্যালয়ে যাবার একমাত্র পথ। ফলে তাদের ভয়ে আমি আমার কর্মস্থল বিদ্যালয়ে যেতে পারছিলাম না। পরবর্তীতে মেলান্দহ থানার পুলিশ এসে তাদেরকে সরিয়ে দিলে আমরা আহতরা হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিই। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। এছাড়া আমি আমার নিরাপত্তার জন্য থানায় অভিযোগ দায়ের করবো বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, তারা বিভিন্ন সময় মানুষের কাছে চাঁদা দাবি করেন। কেউ যদি চাঁদা না দেয় তার উপর চলে নির্যাতন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সোলায়মান হোসেন বাবলু ও তার ছেলে সজিব জানান, ১ এপ্রিল রাতে প্রধান শিক্ষক শহিদুর রহমানকে ইফতারের দাওয়াত দিতে যাই। কিন্তু তিনি দাওয়াত গ্রহণ না করে আমাদের ওপর চরাও হন। একপর্যায়ে তিনি আমাদের লাঞ্ছিত করেন। পরে আমরা চলে আসি।

মেলান্দহ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মাসুদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।