জামালপুরে অপহৃত লাইসুর উদ্ধার, ধৃত ৪ আসামির ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরে অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ৪ জন আসামিকে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিজ্ঞ আদালত। ১৪ জানুয়ারি উভয় পক্ষের শুনানী শেষে বিজ্ঞ মামলা আমলে নেওয়ার জি.আর. সদর আদালত, জামালপুরের ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা আক্তার এ আদেশ দেন।

আসামিরা হলেন- মো. মোশারফ হোসেন (৪৫), মো. বিপ্লব (৩৫), মো. মজনু খান (৪৫) ও মো. নূর ইসলাম।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জামালপুর জজ কোর্টের আইনজীবী মো. মোতাকাব্বির হোসাইনের হেফাজত থেকে তার মক্কেল মো. লাইসুর রহমানকে অপহরণ করে গ্রেপ্তার হওয়া ওই চারজনসহ অন্তত ১৫/১৬ জন আসামি। গত ১০ জানুয়ারি বিকাল আনুমানিক ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে জামালপুর শহরের সকাল বাজারস্থ ইসলামী ব্যাংক এটিএম বুথের সামনে পাকা রাস্তার উপর এ ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় অপহৃতের মা মোছা. নারগিছ বেগম জামালপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তীতে জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে মো. মোশারফ হোসেন, মো. বিপ্লব, মো. মজনু খান ও মো. নূর ইসলামকে গ্রেপ্তার করে জামালপুর থানা পুলিশ। এছাড়াও গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের হেফাজত থেকে অপহৃত মো. লাইসুর রহমানকে উদ্ধার করে জামালপুর আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। বিজ্ঞ আদালত অপহৃত মো. লাইসুর রহমানের জবানবন্দি নিয়ে তার নিজ জিম্মায় মুক্তি দেন। মো. লাইসুর রহমান ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বৈরচুনা গ্রামের মো. আব্দুল আলিমের ছেলে।

ওই ঘটনায় গত ১১ জানুয়ারি অপহৃতের মা মোছা. নারগিছ বেগম বাদী হয়ে গ্রেপ্তর হওয়া আসামিসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করে জামালপুর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

এদিকে অপহরণের পর উদ্ধার মো. লাইসুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্ত্রী’র দায়ের করা একটি মামলার আসামি। আমি ওই মামলায় জামিনে আছি। গত ১০ জানুয়ারি বিজ্ঞ আদালতে আমি হাজিরা দিয়ে আমার নিযুক্ত আইনজীবী মো. মোতাকাব্বির হোসাইনের সাথে রিকশাযোগে তার চেম্বারে যাচ্ছিলাম। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মোটরসাইকেল দিয়ে আসামিগণ জামালপুর শহরের সকাল বাজারস্থ ইসলামী ব্যাংক এটিএম বুথের সামনে পাকা রাস্তার উপর এসে আমাদের রিকশার গতি রোধ করে এবং জোরপূর্বক আমাকে তাদের মোটরসাইকেলে উঠায়। আমার নিযুক্ত আইনজীবী মো. মোতাকাব্বির হোসাইন ওই ঘটনার প্রতিবাদ করলেও আসামিরা তা কর্ণপাত করেনি। আসামিরা আমাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে কিল ঘুষি মেরে একটি ঘরে আটকে রাখে এবং আমাকে হত্যার ভয় দেখিয়ে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ৬টি অলিখিত স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়েছে ওই আসামিরা। পরবর্তীতে পুলিশ আমাকে উদ্ধার না করলে আসামিরা আমাকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলতো।

এদিকে, ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, অপহরণের ১০ ঘণ্টার মধ্যে বিশেষ অভিযান চালিয়ে অপহৃত মো. লাইসুর রহমানকে উদ্ধারসহ ওই ঘটনার সাথে জড়িত চারজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও ওই আসামিদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে ১৪ জানুয়ারি উভয় পক্ষের শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালত ওই আসামিদের বিরুদ্ধে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ওই মামলার বাদী মোছা. নারগিছ বেগম অভিযোগ করে সাংবাদিকদের জানান, ওই মামলার অন্য আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও রহস্যজনক কারণে তাদের গ্রেপ্তার করছে না পুলিশ।

অন্যদিকে, জেলা কারাগারে আটক মো. মোশারফ হোসেনের স্ত্রী মোছা. শাহিদা পারভীন বাদী হয়ে অপহরণের পর উদ্ধার মো. লাইসুর রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে ১২ জানুয়ারি জামালপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।