৯ বছর পর র‌্যাবের জালে ধর্ষক জামান

গ্রেপ্তার জামান ওরফে জবেদ আলী। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম: শেরপুরের শ্রীবরদীতে স্কুল পড়ুয়া এক ছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় জামান ওরফে জবেদ আলী (৩১) নামে যাবজ্জীবনদণ্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামিকে ৯ বছর পর পাকড়াও করেছে র‌্যাব-১৪। ১৫ আগস্ট সকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সংস্থাটি। এর আগে ১৪ আগস্ট দিবাগত রাতে গাজীপুরের শালনার কাথোরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব সদস্যরা।

গ্রেপ্তার জামান উপজেলার গোপালখিলা গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে।

র‌্যাবের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান জানান, স্কুলে যাতায়াতের পথে জামান ওই ছাত্রীকে অনেকদিন যাবত প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। স্কুল ছাত্রীটি ওই প্রেমের প্রস্তাব বারবার প্রত্যাখ্যান করে আসছিল। এ ঘটনার জের ধরে ২০১৪ সালের ১৪ আগস্ট সকালে ওই ছাত্রী প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে বের হয়ে স্থানীয় কাজিমদ্দিন মন্ডলের বাড়ির সামনে ঝিনাইগাতী-ধানশাইল সড়কে পৌঁছা মাত্র আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা জামান জোর পূর্বক তাকে সিএনজিতে উঠিয়ে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রাইভেটের সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও ওই ছাত্রী বাড়িতে ফিরে না আসায় তার স্বজনরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। একপর্যায়ে ছাত্রীর বাবা স্থানীয় লোকজনের মারফত জানতে পারেন তার মেয়েকে জামান ঢাকায় নিয়ে গেছে। পরবর্তীতে মেয়ের বাবা এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে জামানের বাড়িতে গিয়ে অপহরণের বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চায়। এ সময় জামানের পরিবারের লোকজন ছাত্রীর বাবাকে জানায় মেয়েটি জামানের কাছেই আছে। আর এ নিয়ে মামলা মোকাদ্দমা করলে তার মেয়েকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়। পরবর্তীতে ঝিনাইগাতী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঢাকা থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে।

এ সময় ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী তার জবানবন্দীতে জানায়, জামান ঢাকায় একটি ভাড়া বাসায় এক মাস আটকে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ঝিনাাইগাতী থানায় মামলা দায়ের করে। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান আরো জানান, পরবর্তীতে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় শেরপুরের তৎকালিন জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ মোসলেহ্ উদ্দিন আসামি জামানকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। এরপর থেকে জামান ৯ বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিল। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তিনি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পোশাক শ্রমিক এবং সিএনজি চালক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল।

এরপর বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে আসামির অবস্থান সনাক্ত করে র‌্যাবের একটি অভিযানিক দল ১৪ আগস্ট দিবাগত রাতে গাজীপুরের শালনার কাথোরা এলাকা থেকে জামানকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার জামানকে শ্রীবরদী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।