শেরপুরে বনভোজন শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুই শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু, আহত ১৩

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম: শেরপুরের শ্রীবরদীতে বনভোজন শেষে বাড়ি ফেরার পথে যাত্রী বোঝাই একটি ট্রলি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে দুই শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো ১৩জন। ১ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে উপজেলার কলাকান্দা-দিয়ারচর এলাকার ব্রিজের নিচে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- শ্রীবরদীর খড়িয়া কাজীরচর ইউনিয়নের খড়িয়া গ্রামের আবু তালেবের ছেলে ইসমাইল (১৮) ও সেলিমের ছেলে সাইদুল মিয়া (১৮)।

অন্যদিকে আহতদের মধ্যে ওই এলাকার সাগর (২২), মামুন (১৮), লোকমান (১৭), আরিফ (১৬), রাশেদ আলী (১৭), হাফিজুর (১৮), সাকিল (২৫) ও জুয়েল (১৪) কে আহতাবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর বাকীরা শ্রীবরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছে। এদিকে গুরুত্বর আহত আরো একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ওই দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতরা সকলেই শিক্ষার্থী। তারা স্থানীয় বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে পড়াশোনা করত।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ২ ফেব্রুয়ারি সকালে শ্রীবরদী থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ আবুল হাশেম জানান, ট্রলি চালককে আইনের আওতায় আনতে অভিযান শুরু হয়েছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, ১ ফেব্রুয়ারি সকালে শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া গ্রামের ৩০ জন ছাত্র-যুবক লেগুনা গাড়ি করে গারো পাহাড়ের গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্রে বনভোজন করতে যায়। পরে সন্ধ্যায় সেখান থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থী পিকআপ ভ্যানে করে সাউন্ডবক্স ফেরত দিতে শ্রীবরদী বাজারে যায়। এ সময় সাউন্ডবক্স নামিয়ে ট্রলি দিয়ে নিজ নিজ বাড়ি ফেরার সময় দ্রুতগামী ট্রলিটি স্থানীয় কলাকান্দা-দিয়ারচর সড়কের মামদামারী এলাকায় উল্টে রাস্তার পার্শ্বে পড়ে যায়। এসময় ট্রলি থেকে লাফ দিয়ে দুই যুবক প্রাণে বাঁচলেও বাকী ১৩ জনের মধ্যে ইসমাইল ও সাইদুল মারা যায়। ঘটনার পর ট্রলির চালক জুয়েল মিয়া কৌশলে পালিয়ে যায়।

নিহতের স্বজন আলতাফ জানায়, ট্রলিটির অতিরিক্ত গতি থাকায় তা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এর ফলে দুইজনের মৃত্যু হয়।

স্থানীয় লিয়াকত মিয়া জানায়, আহতদের মধ্যে অনেকের মাথা ফেটে গেছে। একজনের ভুড়ি বের হয়ে এসেছে। এছাড়া কেউ কেউ হাঁটু কোমর, ঘাড়সহ শরীরের নানাস্থানে মারাত্মক জখম পেয়ে আহত হয়েছেন।

জেলা সদর হাসপাতালের ইএমও ডা. হুমায়ুন আহমেদ নূর দুইজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ওই দুর্ঘটনায় আরো একজনের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।