শেরপুরে কিশোরকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল, ৪ কিশোর গ্রেপ্তার

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরে নারী ঘটিত বিষয়কে কেন্দ্র করে পাপ্পু নামে এক কিশোরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে নির্মম নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিও ফুটেজটি ৪ আগস্ট রাত ১১টায় আপলোড করে নির্যাতনকারিরা। পরে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। ওই ভিডিও’র একটি ক্লিপ পৌঁছে সদর থানার ওসির ম্যাসেঞ্জার বক্সে। পরে নির্যাতনের শিকার কিশোরের বড় ভাই কোকিল বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে রাতভর অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত চার কিশোরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলো শেরপুর শহরের গোপালবাড়ী এলাকার গোলাম মাহবুবের ছেলে সিয়াম, আমিনুল ইসলাম বাবুলের ছেলে শুভ, বেলাল হোসেনের ছেলে আরমান ও সুজন মিয়ার ছেলে সাজেদুল ইসলাম নাফিন। এ সময় তাদের কাছ থেকে পাপ্পুকে নির্যাতনের সময় ভিডিও ধারণ করার কাজে ব্যবহার করা মোবাইল ফোন ও একটি কোমরের বেল্ট উদ্ধার করা হয়। পরে ৫ আগস্ট দুপুরে ওই চার কিশোরকে শিশু আদালতে পাঠায় পুলিশ।

৭ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওর কথপোকথন থেকে জানা যায়, নারী সংক্রান্ত বিষয়ে কিশোর পাপ্পুকে শেরপুর পৌরসভার পুরাতন পৌর ভবনে ডেকে নিয়ে চার পাঁচজন কিশোর চড়, থাপ্পর, কিল, ঘুষি ও বেল্ট দিয়ে পিটিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালাচ্ছে। নির্যাতনকারিদের মধ্যে সিয়াম নামে এক কিশোর নিজ কোমরের বেল্ট খুলে বকলেসের অংশ দিয়ে পাপ্পুকে বেধরক পেটাচ্ছে। এ সময় পাপ্পু তাদের ভাই বলে সম্বোধন করে হাত, পা ধরে ক্ষমা চেয়ে রক্ষা পাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। এ সময় আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উত্তেজিত কিশোররা তাকে নতুন উদ্যোমে পেটাতে শুরু করে। এবং হাসি তামাশা ও উল্লাস করতে থাকে। এক সময় পাপ্পু আল্লাহ আল্লাহ বলে চিৎকার করতে করতে কান্নায় ভেঙে পড়লে নির্যাতনকারিরা তাকে কান ধরে ওঠবস করায়। চিৎকার করলে তাকে আরও মারধর এবং হত্যার করার হুমকি দেওয়া হয়। এবং নির্যাতনকারি সিয়াম তাকে (পাপ্পু)কে পেটাতে পেটাতে বেল্ট ছিঁড়ে যাওয়ায় একটি নতুন বেল্ট কিনে দেওয়ার দাবি জানায় পাপ্পুর কাছে।

সিভিল সার্জন চিকিৎসক আনোয়ারুর রউফ জানান, নির্যাতনের শিকার কিশোর পাপ্পু বর্তমানে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি আছে। তাকে ব্যথানাশক ইনজেকশনসহ অন্য সকল ওষুধপত্র দিয়ে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অভিযুক্ত চার কিশোরকে শিশু আদালতে পাঠানো হয়েছে।