ঢাকা ০৬:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ইউনিভার্সিটির নামে দখল করা জমি ফেরত চায় ভুক্তভোগীরা

শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য জমি দখলের অভিযোগে শহরের নাওভাঙ্গাচর এলাকায় মানববন্ধন। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য জমি দখলের অভিযোগে শহরের নাওভাঙ্গাচর এলাকায় মানববন্ধন। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের বেসরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ইউনিভারসিটির ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য শতাধিক দরিদ্র মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে বালু দিয়ে ভরাট করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। ২০ আগস্ট মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে শহরের ফৌজদারী মোড়ে নাওভাঙ্গাচরের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। পরে ভরাট করা জমিতে মানববন্ধন হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত দেড় শতাধিক পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন।

জানা গেছে, ২০১৩ সালে জামালপুর শহরের নয়াপাড়া পাঁচরাস্তা মোড় এলাকার একটি ভবনে ইউনিভার্সিটি গড়ে ওঠে। ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজম। এটি পরিচালিত হয় বোর্ড অব ট্রাস্টিজের মাধ্যমে। ২০১৯ সালে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় নাওভাঙ্গাচর এলাকায় ওই ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ওই ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য নাওভাঙ্গাচরের দেড় শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি ভেঙে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ করা হয় মানববন্ধন থেকে।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে আবুল কালাম, জোসনা বেগম, হালিমা বেগম, শেখ ফরিদ, আবদুল হালিম, জাহানারা বেগম প্রমুখ।

নাওভাঙ্গাচরের দেড় শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি ভেঙে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগে শহরের ফৌজদারি এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

বক্তারা বলেন, জামালপুর শহরের ফৌজদারি মোড়ে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে নাওভাঙ্গাচরের অবস্থান। সেখানে প্রায় ৪০ বছর ধরে দেড় শতাধিক পরিবার বসবাস করছিল। ওই গ্রামের পশ্চিম অংশটুকু নদীতে ভেঙে যায়। বর্ষায় পানি থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে সেখানে বালুর চর থাকত। ২০১৯ সাল থেকে হঠাৎ করেই ওই জেগে ওঠা বালুর চরে ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য বালু ভরাট শুরু হয়। ভরাটের একপর্যায়ে পূর্ব পাশের নাওভাঙ্গাচরের দরিদ্র বাসিন্দাদের জমিতেও বালু ফেলা শুরু হয়। একপর্যায়ে ওই এলাকার দেড় শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি ভেঙে জমিগুলো দখলে নেওয়া হয়।

বক্তারা আরও বলেন, মির্জা আজমের নির্দেশে জামালপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনের তত্ত্বাবধানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জমিগুলো দখল করেন। যারা সহজে জমি ছাড়েননি, তাদের ওপর প্রায় প্রতিদিন ব্যাপক মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হতো। জমির কোনো টাকাও দেওয়া হয়নি। ওই সময় পুলিশ দিয়েও ব্যাপক হয়রানি করা হয়। দরিদ্র মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়ে জোরপূর্বক জমি দখল করে ওই ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য বালু ফেলে ভরাট ও সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সব পরিবারের জমি ফেরত ও ক্ষতিপূরণের দাবি করা হয় মানববন্ধন থেকে।

সরকার পতনের পর থেক মির্জা আজম ও মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন পলাতক রয়েছেন।

এ ব্যাপারে জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান বলেন, ওই এলাকায় যাঁরা জমি হারিয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন, তারা যদি আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন, বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখব। সেখানে যদি তাদের জমি থাকে, তাহলে অবশ্যই আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ইউনিভার্সিটির নামে দখল করা জমি ফেরত চায় ভুক্তভোগীরা

আপডেট সময় ০৬:২৩:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪
শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য জমি দখলের অভিযোগে শহরের নাওভাঙ্গাচর এলাকায় মানববন্ধন। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের বেসরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ইউনিভারসিটির ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য শতাধিক দরিদ্র মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে বালু দিয়ে ভরাট করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। ২০ আগস্ট মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে শহরের ফৌজদারী মোড়ে নাওভাঙ্গাচরের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। পরে ভরাট করা জমিতে মানববন্ধন হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত দেড় শতাধিক পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন।

জানা গেছে, ২০১৩ সালে জামালপুর শহরের নয়াপাড়া পাঁচরাস্তা মোড় এলাকার একটি ভবনে ইউনিভার্সিটি গড়ে ওঠে। ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজম। এটি পরিচালিত হয় বোর্ড অব ট্রাস্টিজের মাধ্যমে। ২০১৯ সালে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় নাওভাঙ্গাচর এলাকায় ওই ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ওই ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য নাওভাঙ্গাচরের দেড় শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি ভেঙে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ করা হয় মানববন্ধন থেকে।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে আবুল কালাম, জোসনা বেগম, হালিমা বেগম, শেখ ফরিদ, আবদুল হালিম, জাহানারা বেগম প্রমুখ।

নাওভাঙ্গাচরের দেড় শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি ভেঙে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগে শহরের ফৌজদারি এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

বক্তারা বলেন, জামালপুর শহরের ফৌজদারি মোড়ে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে নাওভাঙ্গাচরের অবস্থান। সেখানে প্রায় ৪০ বছর ধরে দেড় শতাধিক পরিবার বসবাস করছিল। ওই গ্রামের পশ্চিম অংশটুকু নদীতে ভেঙে যায়। বর্ষায় পানি থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে সেখানে বালুর চর থাকত। ২০১৯ সাল থেকে হঠাৎ করেই ওই জেগে ওঠা বালুর চরে ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য বালু ভরাট শুরু হয়। ভরাটের একপর্যায়ে পূর্ব পাশের নাওভাঙ্গাচরের দরিদ্র বাসিন্দাদের জমিতেও বালু ফেলা শুরু হয়। একপর্যায়ে ওই এলাকার দেড় শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি ভেঙে জমিগুলো দখলে নেওয়া হয়।

বক্তারা আরও বলেন, মির্জা আজমের নির্দেশে জামালপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনের তত্ত্বাবধানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জমিগুলো দখল করেন। যারা সহজে জমি ছাড়েননি, তাদের ওপর প্রায় প্রতিদিন ব্যাপক মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হতো। জমির কোনো টাকাও দেওয়া হয়নি। ওই সময় পুলিশ দিয়েও ব্যাপক হয়রানি করা হয়। দরিদ্র মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়ে জোরপূর্বক জমি দখল করে ওই ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য বালু ফেলে ভরাট ও সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সব পরিবারের জমি ফেরত ও ক্ষতিপূরণের দাবি করা হয় মানববন্ধন থেকে।

সরকার পতনের পর থেক মির্জা আজম ও মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন পলাতক রয়েছেন।

এ ব্যাপারে জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান বলেন, ওই এলাকায় যাঁরা জমি হারিয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন, তারা যদি আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন, বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখব। সেখানে যদি তাদের জমি থাকে, তাহলে অবশ্যই আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।