নিহত সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের পরিবারের অনশন

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুল হক মৃদুল সাংবাদিক নাদিমের বৃদ্ধ মা আলিয়া বেগমকে পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম

বাংলা নিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রয়াত সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যা মামলার পলাতক আসামি ফাহিম ফয়সাল রিফাতসহ অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করেছে সাংবাদিক নাদিমের পরিবারের স্বজনরা। ১৩ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম তার ছোট ছেলে আব্দুল্লাহ আল রাফি পাপ্পু, নাদিমের বৃদ্ধ বাবা মো. আব্দুল করিম ও মা আলিয়া বেগমসহ পরিবারের অন্যান্য স্বজনরা ১৩ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনশনে বসেন। জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে অন্যান্য সাংবাদিকবৃন্দ সাংবাদিক নাদিমের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে অনশনে অংশ নেন। সাংবাদিক নাদিমের পরিবারের পক্ষ থেকে বেলা ৫টা পর্যন্ত অনশনের ঘোষণা দেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুল হক মৃদুল সাংবাদিক নাদিমের বৃদ্ধ মা আলিয়া বেগমসহ অন্যান্যদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান। তিনি শোকার্ত পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন এবং তাদের দাবি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর আশ্বাস দেন।

এর আগে অনশন চলাকালে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক নাদিমের বাবা মো. আব্দুল করিম, স্ত্রী মনিরা বেগম, জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান, সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী, সাংবাদিক মোস্তফা মনজু, কাফি পারভেজ, সুমন আনসারী প্রমুখ।

সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী অভিযোগ করে বলেন, মামলাটির গ্রেপ্তারকৃত প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউনিয়নের বরখাস্ত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিথ্যাচার করেছেন।

মামলার বাদী মনিরা বেগম অভিযোগ করে বলেন, চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি কেউ প্রকাশ্যে ঘুরছে। আবার কেউ জামিনে বের হয়ে সাংবাদিক নাদিমের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে সিআইডিতে থাকা মামলাটি র‌্যাবের কাছে হস্তান্তরের দাবি জানাচ্ছি।

চলতি বছরের ১৪ জুন রাতে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জ পাটহাটি এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হন সাংবাদিক নাদিম। পরদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহত সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে সাধুরপাড়া ইউপির বরখাস্ত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নামে ও অজ্ঞাত আরো ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় এ পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব, পুলিশ ও ডিবি পুলিশ। এই ১৭ জন আসামির মধ্যে এজাহার নামীয় আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবুসহ পাঁচজন। তারা কারাগারে আটক রয়েছে। বাকি ১২ জনকে সন্দেহমূলকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১৭ জন আসামির মধ্যে ১২ জন আসামি আদালত থেকে জামিন পেয়েছে। মামলাটি সম্প্রতি সিআইডিতে স্থানান্তরিত হয়েছে।