সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত সাংবাদিক নাদিমের দাফন সম্পন্ন

সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের জানাজা নামাজ।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

মাহমুদুল হাসান মুক্তা, নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত ৭১ টিভি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

১৬ জুন সকাল ১০টায় বকশীগঞ্জ নূর মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তাঁর প্রথম জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাঁর গ্রামের বাড়ি উপজেলার নীলক্ষিয়া ইউনিয়নের গোমেরপাড়ায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জিগাতলা মাঠে অনুষ্ঠিত হয় তাঁর জানাজার দ্বিতীয় নামাজ। সেখানেই পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।

তিনি ওই উপজেলার নীলক্ষিয়া ইউনিয়নের গোমের চর গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে। মৃত্যুকালে তাঁর স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।

বকশীগঞ্জের নূর মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সাংবাদিক নাদিমের প্রথম জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তব্য দেন জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা, জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম, বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহীন আল-আমীন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আগা সায়েম, বকশীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম তালুকদার জুম্মান, বকশীগঞ্জ থানার ওসি সোহেল রানা, জেলা পরিষদের সদস্য জয়নাল আবেদীন, নিহত নাদিমের বড় ছেলে রিফাত প্রমুখ।

সাংবাদিক নাদিমের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

উল্লেখ্য, ১৪ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় পাটহাটি এলাকায় সাংবাদিক নাদিমের ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। উপর্যুপরি নির্যাতন করে অন্ধকারে ফেলে রাখা হয় তাঁকে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় ১৫ জুন সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

১৫ জুন বেলা আড়াইটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

এ ঘটনায় সাংবাদিক নাদিমের ওপর হামলার সাথে জড়িত থাকায় পুলিশ ছয়জনকে আটক করেছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে আটকদের নাম প্রকাশ করা যাবে না।

মরহুমের জানাজায় বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল রানা জানান, এ ঘটনায় এখনও কোন মামলা হয়নি। তবে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে শনাক্তের পর এদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ঘটনার সাথে জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারের জন্য উপস্থিত লোকজনের সহযোগিতা কামনা করেন।

নিহত সাংবাদিক নাদিমের মা আলেয়া বেগম অভিযোগ করেন, সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান বাবুর অপকর্ম ও দুর্নীতির খবর প্রকাশ করার কারণেই তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা চালিয়ে আমার একমাত্র ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি বাবু চেয়ারম্যানসহ জড়িতদের ফাঁসি চাই। একই দাবি জানিয়েছেন নিহত সাংবাদিক নাদিমের পরিবারের সদস্যরা। অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও।

এদিকে, তাঁকে হত্যার ঘটনায় নানা কর্মসূচি পালন করেছে জেলার সকল সাংবাদিক সংগঠন। একই সাথে চলছে নানা কর্মসূচিও।