মুশফিকের রেকর্ড গড়া ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক : মুশফিকুর রহিমের রেকর্ডের পর বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার দ্বিতীয় ওয়ানডে পরিত্যক্ত হলো।

বাংলাদেশের ইনিংস শেষে ঝুম বৃষ্টিতে উইকেট ঢেকে দেওয়া হয়। কিন্তু বৃষ্টির তেজ অব্যাহত থাকায় স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৩২ মিনিটে দ্বিতীয় ওয়ানডে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। কাট-অফ টাইম ছিলো ৯টা ৩৩ মিনিট। কিন্তু বৃষ্টি না কমায় আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ম্যাচ অফিসিয়ালরা।

আগামী ২৩ মার্চ একই ভেন্যুতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ওয়ানডে রেকর্ড ১৮৩ রানে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ।

মুশফিকুরের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৪৯ রানের পাহাড় গড়ে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ছয় নম্বরে নেমে ৬০ বলে অপরাজিত ১০০ রানের ইনিংস খেলেন মুশফিক। ৬০ বলে শতক করে বাংলাদেশের পক্ষে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন মুশফিক। এছাড়া নাজমুল হোসেন শান্ত ৭৩ ও লিটন দাস ৭০ রান করেন।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজও টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে স্বাগতিক বাংলাদেশ। আঁটসাঁট বোলিংয়ে বাংলাদেশের দুই ওপেনার অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও লিটন দাসকে আটকে রেখেছিলেন আয়ারল্যান্ডের দুই পেসার মার্ক অ্যাডায়ার ও গ্রাহাম হুম। প্রথম ৪ ওভারে মাত্র ৫ রান তুলতে পারেনি তামিম ও লিটন। পঞ্চম ওভারে প্রথম বাউন্ডারির দেখা পায় বাংলাদেশ। পাওয়ার-প্লের শেষ বলে দলীয় ৪২ রানে রান আউট হয়ে থামেন তামিম। ৪টি চারে ৩১ বলে ২৩ রান করেন তামিম।

এরপর নাজমুল হোসেন শান্তকে দলের রানের চাকা ঘুড়ান লিটন। ২০তম ওভারে ১শ রান পায় বাংলাদেশ। পরের ওভারের প্রথম বলে ছক্কায় ওয়ানডেতে অষ্টম হাফ-সেঞ্চুরি পূরন করেন লিটন।

৫৩ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করা লিটন শেষ পর্যন্ত ৭০ রানে পেসার কার্টিস ক্যাম্পারের বলে বিদায় নেন লিটন। ৭১ বল খেলে ৩টি করে চার-ছয় মারেন লিটন। এই ইনিংসেই ওয়ানডেতে ২ হাজার রান পূর্ণ করেন লিটন। দ্বিতীয় উইকেটে শান্তর সাথে ৯৬ বলে ১০১ রান যোগ করেন লিটন।

লিটনের ফেরার পর উইকেটে এসে ভালো শুরু করেও হুমের প্রথম শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ১৭ রানে আউট হন সাকিব আল হাসান। সাকিবের সাথে ৩৯ রানের জুটি গড়ার পথে ৫৯ বলে ওয়ানডেতে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি করেন শান্ত।

লিটনের মত ইনিংস করার চেষ্টা করেও ৭৩ রানেই থেমে যান শান্ত। হুমের দ্বিতীয় শিকার হবার আগে ৭৭ বল ৩টি চার ও ২টি ছয়ে নিজের ইনিংস সাজান শান্ত।

৩৪তম ওভারে দলীয় ১৯০ রানে শান্তর আউটে জুটি বাঁধেন তাওহিদ হৃদয় ও মুশফিকুর রহিম। দ্রুত উইকেটে সেট হয়ে মারুমুখী ব্যাট করতে থাকেন তারা। ৪৩তম ওভারে ছক্কায় ৩৪ বলে ওয়ানডেতে ৪৪তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন আজও ছয় নম্বরে নামা মুশফিক।

মুশফিক পারলেও অর্ধশতক হাতছাড়া করেন দারুণ খেলতে থাকা হৃদয়। অ্যাডায়ারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৩৪ বলে ৪টি চার ও ১টি ছয়ে ৪৯ রানে আউট হন হৃদয়। পঞ্চম উইকেটে ৭৮ বলে ১২৮ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের স্কোর ৩শ পার করেন মুশফিক-হৃদয়।

দলীয় ৩১৮ রানে হৃদয় ফেরার সময় মুশফিকের রান ছিল ৪৬ বলে ৭৮। সেঞ্চুরি পেতে ইনিংসের শেষ ৪ বলে ৯ রান দরকার পড়ে মুশফিকের। তৃতীয় থেকে পঞ্চম বলে ১টি চারে ৮ রান নেন মুশফিক। শেষ বলে ১ রান নিয়ে ওয়ানডেতে নবম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মুশফিক। ৬০ বলে তিন অংকে পা দিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন মুশফিক। ২৪৪ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এই প্রথম ছয় নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি করলেন মুশফিক।

মুশফিকের ৬০ বলে অপরাজিত ১০০ রানের সুবাদে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৪৯ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে এটি সর্বোচ্চ দলীয় রান টাইগারদের। মুশফিকের ইনিংসে ১৪টি চার ও ২টি ছক্কা ছিলো। এই ইনিংস খেলার পথে ৭ হাজার রানও পূর্ণ করেন মুশি। বল হাতে আয়ারল্যান্ডের হুম ৩ উইকেট নেন।

স্কোর কার্ড :
বাংলাদেশ ইনিংস :
তামিম রান আউট ২৩
লিটন ক ম্যাকব্রিন ব ক্যাম্পার ৭০
নাজমুল হোসেন শান্ত স্টাম্প টাকার ব হুম ৭৩
সাকিব ক টেক্টর ব হুম ১৭
হৃদয় ক টাকার ব অ্যাডায়ার ৪৯
মুশফিক অপরাজিত ১০০
ইয়াসির ক ডোহেনি ব হুম ৭
তাসকিন অপরাজিত ১
অতিরিক্ত (বা-১, লে বা-২ ও-৬) ৯
মোট (৬ উইকেট, ৫০ ওভার) ৩৪৯
উইকেট পতন : ১/৪২ (তামিম), ২/১৪৩ (লিটন), ৩/১৮২ (সাকিব), ৪/১৯০ (শান্ত), ৫/৩১৮ (হৃদয়), ৬/৩৩৯ (ইয়াসির)।
আয়ারল্যান্ড বোলিং :
অ্যাডায়ার : ১০-১-৬০-১ (ও-১),
হুম : ১০-২-৫৮-৩,
ক্যাম্পার : ১০-০-৭৩-১,
হামফ্রেসে : ৭-০-৫৯-০,
ম্যাকব্রিন : ৯-০-৬৮-০,
টেক্টর : ৪-০-২৮-০।
ফল : পরিত্যক্ত।
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ।