ইসলামপুরে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত

ইসলামপুরে হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের করা হয়।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

লিয়াকত হোসাইন লায়ন, ইসলামপুর প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুরের ইসলামপুরে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। একাত্তরের এইদিনে বাংলার অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিনের নেতৃত্বে ইসলামপুর উপজেলায় প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে ৭ ডিসেম্বর ইসলামপুর উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের অংশগ্রহণে শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে থানামোড় বটতলা চত্বরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান রুমানের সভাপতিত্বে সাবেক কমান্ডার মানিকুল ইসলাম মানিক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আইনজীবী জামাল আব্দুন নাছের বাবুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাদত হোসেন স্বাধীন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী আ. সালাম, সহ-সভাপতি আবু নাছের চৌধুরী চার্লেস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ১১ নম্বর সেক্টর কমান্ডারের নির্দেশে ইসলামপুর উপজেলার উত্তর দরিয়াবাদ ফকির পাড়া গ্রামের মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন কোম্পানির মুক্তিযোদ্ধারাসহ বিভিন্ন ইউনিনের যোদ্ধারা ইসলামপুর সিরাজাবাদ এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গেরিলা যুদ্ধ চালান। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প দখলের উদ্দেশে ৬ ডিসেম্বর দুপুরে ইসলামপুরের পলবান্ধা পশ্চিম বাহাদুরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ সংলগ্ন সিরাজাবাদ রোডে অবস্থান নিয়ে চারটি ভাগে বিভক্ত হয়ে হানাদার ক্যাম্পে চারদিক থেকে আক্রমণ চালায় । সেদিন দুপুর থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত একটানা যুদ্ধ হয় ।

সেদিন মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে টিকতে না পেরে হানাদার বাহিনী অস্ত্র, গোলাবারুদসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ফেলে ট্রেনযোগে জামালপুরের দিকে পালিয়ে যায়। হানাদার বাহিনী ইসলামপুর থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর ৭ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় ইসলামপুর থানা প্রশাসন, আওয়ামী লীগনেতাসহ হাজারও মুক্তিকামী জনতা আনন্দ উল্লাস করে ইসলামপুর থানা চত্বরে সমবেত হয়। সেই সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন ইসলামপুরের মাটিতে প্রথম বিজয় পতাকা উত্তোলন করেন। সেই দিন থেকেই ইসলামপুরের মাটি শত্রুমুক্ত হয় ।