জামালপুরে পশুর চামড়া ব্যবসা পর্যবেক্ষণ করে গেলেন সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ

জামালপুর শহরের চামড়াগুদাম মোড় এলাকায় পশুর চামড়া ব্যবসায়ী বেলাল হোসেনের চামড়া গুদাম পরিদর্শন করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

মাহমুদুল হাসান মুক্তা, নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুরে চামড়া ব্যবসা পর্যবেক্ষণ করে গেলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। ১৫ জুলাই সকালে তিনি জামালপুরে কুরবানির পশুর চামড়া ব্যবসা পর্যবেক্ষণে আসেন। প্রথমে তিনি জামালপুর সদরের নান্দিনা বাজারে কুরবানির পশুর চামড়া ব্যবসায়ীদের সাথে এবং পরে তিনি জামালপুর শহরের চামড়া গুদাম এলাকায় চামড়া ব্যবসায়ীদের গুদাম পরিদর্শন করেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ ১৫ জুলাই সকালে জামালপুর শহরের কাছারিপাড়া চামড়াগুদাম মোড় এলাকায় পশুর চামড়া ব্যবসায়ী মো. বেলাল হোসেনের গুদাম পরিদর্শন করেন এবং চামড়া সংরক্ষণ ও এবারের ব্যবসার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। এ সময় ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে জানান, কুরবানির ঈদ উপলক্ষে সরকার এবার চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও চামড়া সংরক্ষণের জন্য তাদেরকে উচ্চমূল্যে লবণ কিনতে হচ্ছে। কুরবানির ঈদের আগে প্রতি বস্তা লবণের দামি ছিল ৭৫০ টাকা। ঈদের পরেই লবণের দাম বেড়ে হয়েছে প্রতিবস্তা ১ হাজার ৫০ টাকা করে। একদিকে লবণের দাম বেড়েছে, অন্যদিকে বাজারে বেশি দামেও লবণ পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনি আরও জানান, জেলাপর্যায়ে পশু চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন ট্যানারি মালিকরা প্রতিবছর বাকিতে পশুর চামড়া কিনেন। কিন্তু প্রতিবছর চামড়া বিক্রির বকেয়া টাকা তারা পরিশোধ করেন না। ফলে কয়েক বছর ধরে একেকজন চামড়া ব্যবসায়ীর ৮ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা করে ট্যানারি মালিকদের কাছে বকেয়া পাওনা রয়েছে। চামড়া ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যাংক থেকে কোনো ঋণ দেওয়া হয় না। ফলে চামড়া ব্যবসায়ীরা সারা বছর ধরেই এবং কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্যক্তিগত পুজিতে এই ব্যবসায় টাকা খাটিয়ে ব্যবসায় হিমশিম খাচ্ছেন।

এ সময় ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন চামড়া ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যাংক ঋণ ও আর্থিক প্রণোদনা দেওয়ার দাবি জানান। একই সাথে ট্যানারি মালিকদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা লাখ লাখ টাকার বকেয়া পাওনা আদায়ের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।

এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বাংলারচঠিডটকমকে বলেন, কুরবানির পশুর চামড়া ব্যবসায়ীরা যাতে ক্রয়কৃত চামড়ার সঠিক মূল্য পায় এ ব্যাপারে স্থানীয় জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকেও মাঠপর্যায়ে খোঁজখবর নিচ্ছি আমরা। চামড়ার ব্যবসায়ীদের যেন লোকসান গুণতে না হয় সেদিকে সরকার সজাগ রয়েছে। জেলাপর্যায়ে পশুর চামড়া ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ঋণ ও প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়টিও সরকারের কাছে তুলে ধরা হবে। ট্যানারি মালিকদের কাছে আটকে থাকা ব্যবাসায়ীদের বকেয়া পরিশোধের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ট্যানারি মালিকদের বলা হয়েছে। তবে সরকার এ বিষয়ে সরাসরি কোন পদক্ষেপ নিতে পারেন না। তাই বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইসি’র নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে বকেয়া টাকা পরিশোধের বিষয়ে উপায় খোঁজা হচ্ছে।

সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এর আগে সকালে জামালপুর সদর উপজেলার রানাগাছা ইউনিয়নের নান্দিনা বাজারের চামড়াপট্টি এলাকায় চামড়া ব্যবসায়ীদের গুদাম, মোকাম ও চামড়া সংরক্ষণের কার্যক্রম পরিদর্শন ও ব্যবসায়ীদের সাথে তাদের নানা সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। এই পরিদর্শন টিমে আরো ছিলেন জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটুস লরেন্স চিরান ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বরকত উল্লাহ।