জামালপুরে দুদক কার্যালয় উদ্বোধন করলেন দুদক কমিশনার জহুরুল হক

জামালপুরে দুদক এর সমন্বিত জেলা কার্যালয় বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন করেন দুদক কমিশনার মো. জহুরুল হক। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: দুর্নীতিকে শেকড় সমেত উৎপাটনের লক্ষে জামালপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর সমন্বিত জেলা কার্যালয় উদ্বোধন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে স্থানীয় প্রশাসন, সরকারি বিভিন্ন দপ্তর, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাথে ৩ জুলাই এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায়।

জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন দুদক ময়মনসিংহ বিভাগীয় পরিচালক মুর্শেদ আলম। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান ও জেলা দুদক এর উপপরিচালক মলয় কুমার সাহার সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহিদুল হক, অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী হাকিম সরকার আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরা মোস্তারী ইভা, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম, জামালপুর প্রেসক্লাবের প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন মিন্টু, বাংলাদেশ টেলিভিশনের জেলা সংবাদদাতা মোস্তফা বাবুল, ঝাউলা গোপালপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক তারিকুল ফেরদৌস, মেলান্দহ উপজেলা দুপ্রকের সভাপতি ইসমত পাশা, ঝিনাইগাতী উপজেলা দুপ্রকের সভাপতি, শেরপুর দুদকের পিপি আইনজীবী মোখলেছুর রহমান জীবন প্রমুখ।

জামালপুরে দুদক এর মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন দুদক কমিশনার মো. জহুরুল হক।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

এর আগে জামালপুর শহরের আমলাপাড়ায় তিনতলা বিশিষ্ট ভাড়া বাসায় স্থাপিত সমন্বিত জেলা কার্যালয় বেলুন উড়িয়ে, লালফিতা কেটে উদ্বোধন করা হয়। বিশেষ মোনাজাতও করা হয়। পরে দুদক কমিশনার মো. জহুরুল হক সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। দুদক কমশিনার, জেলা প্রশাসক এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দুদকের নতুন কার্যালয়ে প্রবেশকালে তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।

দুদক কমশিনার, জেলা প্রশাসক এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দুদকের নতুন কার্যালয়ে প্রবেশকালে তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

দুদক কমিশনার মো. জহুরুল হক বলেন, বাংলাদেশে নিরক্ষর ও সাধারণ লোক দুর্নীতি করে না। দুর্নীতি করে তথাকথিত শিক্ষিত লোকরা। আমাদের দেশের অল্পশিক্ষিত লোকরা বিদেশে গিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতি বছর ৭০ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা রেমিটেন্স পাঠায় আর শিক্ষিত, আমলা, নেতা, ব্যবসায়ীরা প্রতি বছর প্রায় সমপরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার করে। সুইজ ব্যাংকে কালো টাকা জমা রাখে। ইসলাম ধর্মের আদর্শ অনুসরণ করে নিউজিল্যান্ড এক নম্বর দুর্নীতিমুক্ত দেশ আর ইসলাম ধর্মের জন্ম যেখানে সেই সৌদি আরব দুর্নীতি কমের তালিকায় ১৩৩তম দেশ। আমাদের দেশের ইঞ্জিনিয়ার সাহেবরা দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে। কিন্তু বছর যেতে না যেতেই রাস্তা চলাচলের অবস্থা থাকে না। সাধারণ মানুষকে বড়লোক হওয়াকে মানুষগুলোকে প্রশ্ন করতে হবে আপনি এত টাকা কোত্থেকে পান, স্ত্রী স্বামীকে প্রশ্ন করবে বেতন পাও ৫০ হাজার ৮০ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া দাও কীভাবে? এ ধরনের প্রশ্ন যেদিন আমরা সবাই করতে পারবো সেদিনই দুর্নীতি কমতে শুরু করবে। তিনি বলেন, দুর্নীতি করে অর্জিত টাকায় বহুতল বাড়ি করে সে বলতে পারে না এটা আমার বাড়ি। কালোটাকায় গুলশান বাড়ি বানিয়ে দুর্নীতিবাজরা বলেন এটা শ্বশুর উপহার দিয়েছে। অথচ শ্বশুর বাস করে টিনের দোচালা ঘরে।

জামালপুর জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায় বলেন, প্রত্যেক ধর্মেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে অথচ ধর্মের বাণী আমরা অনুসরণ করি না। জাতির জনকের সোনার বাংলা গড়তে হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারলে একদিন বাংলাদেশ ঠিকই দুর্নীতিমুক্ত হবে।