৫০ বছরেও কেউ কথা রাখেননি

কোন সেতু না থাকায় নৌকা দিয়ে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে স্থানীয়দের। শুকনো মৌসুমে নদীতে চর পড়ে যাওয়ায় যাতায়াত আরও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

সুমন মাহমুদ, বিশেষ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: স্বাধীনতার পর থেকেই একটি সেতু করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু বাস্তবায়ন করেননি কেউ-ই। নির্বাচন এলেই তারা প্রতিশ্রুতি দেন এবার সেতু হবে। তবে নির্বাচন শেষে তাদের আর দেখা মেলে না।

কথাগুলো বলছিলেন জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের চরপোগলদিঘা গ্রামের বাসিন্দা মো. আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি জানান, একপাশে সরিষাবাড়ী অন্যপাশে কাজিপুর উপজেলা। এর মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে ২০০ বছরের পুরোনো সুবর্ণখালি নদী। নদীর দুই পাড়ে লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। তারা প্রতিনিয়ত এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। তবে সেতু না থাকায় তাদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

আবু বক্করের মতোই ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা জানান, নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে সরিষাবাড়ী উপজেলাসহ সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ২০-২৫টি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। সড়কপথে কাজিপুর উপজেলার দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার এবং নৌপথে প্রায় ২৫ কিলোমিটার। তাই কাজীপুর উপজেলার জনসাধারণের চলাফেরা, মার্কেট সবকিছু এপারের সরিষাবাড়ী উপজেলায়। শুকনো মৌসুমে নদীতে চর পড়ে যায়। তখন যাতায়াত করা আরও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। যাতায়াতের বেহাল অবস্থার কারণে তারা সময়মতো শহরে ফসল বিক্রি করতে পারেন না। কৃষকরা লোকসান গুনছেন। একটি সেতুর অভাবে ওই এলাকা একটি বিচ্ছিন্ন জনপদে পরিণত হয়েছে।

যমুনা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা জানান, অনেক সময় খেয়া পারাপারে দেরি হওয়ায় তারা গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস করতে পারেন না। বর্ষার সময় নদী পারাপারে তাদের প্রায়ই ভিজতে হয়। অনেক সময় ভেজা পোশাকেই ক্লাস করতে হয়।

পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামস উদ্দিন বলেন, সেতুটি এলজিইডির তালিকাভুক্ত হয়েছে। তালিকাভুক্ত হওয়ার পর কিছু কাজ বাকি থাকে। আশা করা যায় আগামী এক বছরের মধ্যে সেতুটি হবে।

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সায়েদুজ্জামান সাদেক জানান, যেহেতু জায়গাটি এলজিইডির আওতাভুক্ত তাই সামনে নতুন কোনো সেতুর অনুমোদন পেলে এই সেতুটির নাম অন্তর্ভুক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।