জীবন কাটলো ঝুপড়ি ঘরে, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া পাকা ঘরে থাকবো কখনো ভাবিনি
লিয়াকত হোসাইন লায়ন, ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম
মানিক মিয়া, একসময় তাদের ঘরবাড়ি সব ছিলো। ৪ যুগ আগে থেকেই পর্যায়ক্রমে ভয়ংকর যমুনার করালগ্রাসে ভিটেবাড়িসহ সমস্ত কিছু নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এরপর থেকে অন্যের জায়গায় ঝুপড়ি বেঁধে কিংবা সরকারি অফিসের বারান্দায় পরিবার নিয়ে রাত্রিযাপন করছে। সংসারে অভাব লেগে থাকায় ভাবতেই পারেনি এক টুকরো জমি কিনে ঘর করতে পারবে।
জামালপুরের ইসলামপুরে নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের উলিয়া গ্রামের সুবিধাভোগী মৃত মোরাদুজ্জামানের ছেলে মানিক মিয়া (৬০) তার জীবনের অশ্রুশিক্ত নয়নে এমন কষ্টের কথা বলেন। আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় সেমি পাকা ঘর পেয়ে তিনি আনন্দে আত্মহারা। বিশ্বাস করতে পারেন না পাকা ঘরে থাকবেন।
মানিক মিয়া ছাড়াও শাহিন মিয়ার স্ত্রী নাজমা বেগম (৪৫) সংসারের অভাব-অনাটন ও শারীরিক সক্ষমতার কারণে পাকা ঘরের স্বপ্ন শেষ হয় তাদের। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর উপহারের তালিকায় তার নাম থাকবে এটা তারা জানতেনই না। বাড়িতে ইট, বালু, সিমেন্ট আসতে দেখলে অবাক হয়ে যান তিনি। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে পাকা ঘর পেয়েছেন। শুনে খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েন। স্বপ্ন পূরণ হওয়ার পালা। ঘরের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরে বসবাস শুরু করবেন। ঘরের কাজের মান অনেক ভালো হচ্ছে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করেন।
জানা গেছে, মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার হিসেবে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের তালিকাও তৈরি করে ২০০ পরিবারের জন্য নির্মিত হচ্ছে পাকা ঘর। প্রতিটি পরিবারের জন্য দুই শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত দিয়ে ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। বাথরুম, গোসলখানা, বারান্দাসহ দুই কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি আধাপাকা ঘরের নির্মাণ ব্যয় এক লাখ ৯০ হাজার টাকা। সরকারি খাস জমিতে এসব ঘর নির্মাণের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যেই ঘরগুলো গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মধ্যে হস্থান্তর করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, ঘর নির্মাণ কাজ দ্রুত চলছে। নূন্যতম ২ শতাংশ জমির বন্দোবস্ত কাগজসহ নির্ধারিত সময়ে উপকারভোগীদের মধ্যে ঘরগুলো হস্তান্তর করা হবে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘরগুলো ভূমিহীন ও গৃহহীনদের একটি স্বপ্নের নীড়। তাদের এই স্বপ্নে নীড় বাস্তবায়নের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। পর্যায়ক্রমেই আমরা গৃহহীনদের পুনর্বাসন করবো।