সরিষাবাড়ীর গৃহবধূ মাহমুদাকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় স্ত্রীকে হত্যা মামলার রায়ে পলাতক প্রধান আসামি ওই গৃহবধূর স্বামী মো. হারুনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলাটির অপর তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জামালপুরের জ্যেষ্ঠ দায়রা জজ মো. জুলফিকার আলী খাঁন এ রায় ঘোষণা করেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত আসামি হারুন সরিষাবাড়ী উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের করগ্রাম পশ্চিমপাড়া গ্রামের ওয়াদুদ মণ্ডলের ছেলে। মামলায় বেকসুর খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন ওই গৃহবধূর শ্বশুর ওয়াদুদ মণ্ডল, শাশুড়ি রাজিয়া বেগম ও ননদ রিজু বেগম।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, পলাতক আসামি হারুন কাতারে চাকরিতে যাওয়ার আগে জামালপুর সদরের রঘুনাথপুর দিঘুলী গ্রামের মো. খলিলুর রহমানের মেয়ে মাহমুদা বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই কাতারে যাওয়ার টাকার জন্য হারুন তার স্ত্রী মাহমুদাকে চাপ প্রয়োগ ও নির্যাতন করেন। একপর্যায়ে মাহমুদার বাবা খলিলুর রহমান ধারকর্জ করে আড়াই লাখ টাকা জোগাড় করে দিলে হারুন কাতার চলে যান। চার বছর পর কাতার থেকে ফিরে সেই টাকা পরিশোধ না করায় বিপাকে পড়েন গৃহবধূ মাহমুদার বাবা। সেই টাকার জন্য চাপ দিলে হারুন তার স্ত্রীকে মাঝেমধ্যেই নির্যাতন করেন এবং এ নিয়ে পারিবারিক কলহ বাড়তে থাকে।

ধারাবাহিক নির্যাতনের একপর্যায়ে ২০১২ সালের ২৫ জুলাই সকালে হারুন ও তার পরিবারের সদস্যরা নিজ বাড়িতে তার স্ত্রী মাহমুদাকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূ মাহমুদার বাবা খলিলুর রহমান বাদী হয়ে ঘটনার দিনই সরিষাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মাহমুদার স্বামী হারুনকে প্রধান আসামিসহ শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদকে আসামি করা হয়।

মামলাটির রাষ্ট্রপক্ষে ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দীর্ঘ প্রায় আট বছর সাত মাস পর আদালত উল্লিখিত রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি নির্মল কান্তি ভদ্র এবং আসামি পক্ষ সমর্থন করেন আইনজীবী মো. আমান উল্লাহ আকাশ ও মোজাম্মেল হক।