ব্ল্যাড ক্যান্সারে আক্রান্ত মেয়েকে চিকিৎসা করাতে পারলেন না মমতাময়ী মা

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত রুকসানার মরদেহ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

ব্ল্যাড ক্যান্সারে আক্রান্ত মেয়েকে চিকিৎসা করাতে পারলেন না মমতাময়ী মা রুকসানা (৪০)। ৩১ জানুয়ারি সকালে শেরপুর সদর উপজেলার বাজিতখিলা ইউনিয়নের মির্জাপুর এলাকায় ওই মা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। এক ঘাতক ট্রাক তার জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দেয়। এ সময় নিহত হন আরও তিনজন। আহত হন তিনজন। এর মধ্যে ব্ল্যাড ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশু কন্যা রুমি খাতুন (৬) ছিল। সেও গুরুতর আহত হয়।

রুকসানার বাবা কৃষক মোহাম্মদ আলী (৫৫) কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, তার নাতনী রুমি দীর্ঘদিন যাবত মরণব্যাধী ব্ল্যাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। তাই মেয়ে রুকসানা নাতনীর চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে শেরপুরের চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতেন। আজ (৩১ জানুয়ারি) সকালে চিকিৎসার বিষয়ে শেরপুর আসার পথে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। আর নাতনীর অবস্থাও গুরুতর।

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রুমি খাতুন (তার মুখের আহত অংশটুকু অস্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে)। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী বাজার থেকে যাত্রী নিয়ে শেরপুর শহরে আসছিল। পথিমধ্যে শেরপুর-নালিতাবাড়ী সড়কের মির্জাপুর এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রæতগতির ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজি অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচরে সড়কের পাশে ছিটকে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই সিএনজির ৩ যাত্রী নিহত ও হাসপাতালে আনার পর আরও একজন মারা যায়। গুরুতর আহত ৩ জন বর্তমানে সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। নিহতরা হলেন- রুকসানা, সেলিম, ময়না ও জবেদ আলী। এর মধ্যে সেলিম ও ময়না সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। জবেদ আলী ছিলেন সিএনজিচালক। আহত এবং নিহতদের সকলের বাড়ি জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত জরুরি চিকিৎসা কর্মকর্তা নুপুর ভৌমিক জানান, আহতদের অবস্থাও আশংকাজনক।

সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ-আল মামুন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ঘাতক ট্রাকটি আটক করা হলেও চালক পালিয়ে গেছে।