টাকা আত্মসাৎ ও ব্যাংক জালিয়াতি, সরিষাবাড়ীতে তিন কলেজশিক্ষক বরখাস্ত

বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পের টাকা আত্মসাতকারী তিন শিক্ষক রমেশ চন্দ্র সূত্রধর, মুহাম্মদ হারুন অর রশিদ ও ইয়াসমিন সুলতানা। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার মাহমুদা সালাম মহিলা কলেজের দুইজন সহকারী অধ্যাপক ও একজন প্রভাষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সিইডিপি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ১০ নভেম্বর কলেজ গভর্ণিংবডির বৈঠকে তাদের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বরখাস্তকৃতরা হলেন- কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমেশ চন্দ্র সূত্রধর, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ এবং সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক ইয়াসমিন সুলতানা।

কলেজের গভর্ণিংবডির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান ১২ নভেম্বর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তিনজনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কলেজ শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইডিপি) অর্থ আত্মসাৎ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট জালিয়াতি, কলেজের বিভিন্ন খাতের অর্থ তছরুপ, দরপত্র ও নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে। সম্প্রতি সিইডিপি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট তদন্ত দল পরিদর্শন করে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওই তিনজনকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কলেজ সূত্র জানায়, ওই তিনজনই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনহীন স্থানীয়ভাবে নিয়োগকৃত শিক্ষক। এরমধ্যে অধ্যক্ষ রমেশ চন্দ্র সূত্রধর ২০০৩ সালে অনিয়মের দায়ে কলেজ থেকে বরখাস্ত হন। পরবর্তীতে ম্যানেজিং কমিটিকে হাত করে খ-কালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেন এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হন। একইভাবে সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ এবং তার স্ত্রী প্রভাষক ইয়াসমিন সুলতানাও খ-কালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেন এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সাথে যোগসাজশে নানা অনিয়ম শুরু করেন।

এদিকে নিয়মানুযায়ী কোনো নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক সিইডিপি প্রকল্পের সদস্য হতে না পারলেও তারা ক্ষমতার প্রভাবে সিইডিপি প্রকল্পের সদস্য হন এবং যোগসাজশে অনিয়ম করে সিংহভাগ টাকা হাতিয়ে নেন। সিইডিপি প্রকল্পের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) এ কে এম মুখলেছুর রহমান স্বাক্ষরিত গত ৩১ আগস্টের এক প্রতিবেদনে অধ্যক্ষ ও প্রকল্পের ম্যানেজারকে ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিধি বহির্ভূত ব্যয় করা এক লাখ ১৩ হাজার ১০১ টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন।

এ প্রসঙ্গে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নূরুন নাহার এ প্রতিনিধিকে বলেন, তিন শিক্ষকের নামে অব্যাহতিপত্র পাঠানো হয়েছে। অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।