শেরপুরে বিক্রি করা সন্তানকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিল পুলিশ

মা ও শিশুকে শেরপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

৯১ হাজার টাকার বিনিময়ে ঔরসজাত সন্তানকে অন্যত্র বিক্রি করে দেন পাষন্ড বাবা সুলতান। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মা সোমা আক্তার সন্তানকে ফিরিয়ে আনতে স্বামীর কাছে বারবার অনুরোধ করেন। কিন্তু এ কথা কানে তুলেননি স্বামী সুলতান। বরং স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং হেনস্থা করেন। পরে সন্তানের শোকে ইউরিয়া সার খেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় মা সোমা। ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুরে শেরপুর সদর উপজেলার সাপমারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে থানা পুলিশের ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় সড়কে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে থাকা মা’কে উদ্ধার করেন। সেই সাথে পুলিশি তৎপরতা চালিয়ে শিশুটিকেও উদ্ধার কররে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। পরে মা ও শিশুকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে শিশুটির বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, সদর উপজেলার সাপমারী গ্রামের সুলতান ঘরে দুই স্ত্রী রেখে প্রায় আড়াই বছর আগে গাজীপুরের মাওনা এলাকার সোমা আক্তারকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এদিকে তাদের দাম্পত্য জীবনে সোমা আক্তার গভবর্তী হন। সম্প্রতি শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে সোমা সিজারের মাধ্যমে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। এদিকে সিজারের জন্য স্বামী সুলতান ২২ হাজার টাকা খরচ করেন। পরে সিজারের ২২ হাজার টাকা সুলতান স্ত্রী সোমা আক্তারের কাছে দাবি করেন। এবং টাকা না দিলে সন্তানকে বিক্রি করে টাকা আদায় করবে বলে হুঁশিয়ারি দেন। এক পর্যায়ে স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা আদায় করতে না পেরে পাশ্ববর্তী কানাশাখলা গ্রামের শফিকের কাছে ওই শিশুটিকে ৯১ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন সুলতান।

এদিকে ৩০ সেপ্টেম্বর শিশুটির মা সোমা আক্তার সন্তানের খোঁজে শফিকের বাড়িতে যান। এ সময় ক্রেতা শফিক শিশুটি তার বাসায় নেই জানিয়ে সোমাকে তাড়িয়ে দেন। পরে ফেরার পথে স্থানীয় কানাশাখলা বাজারে ইউরিয়া সার খেয়ে সোমা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ খবর স্থানীয়দের মাধ্যমে পুলিশের কাছে পৌঁছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মা ও সন্তানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।

অন্যদিকে শফিক দাবি করেছে সে শিশুটিকে কিনে নয় বরং তার সন্তান না থাকায় লালন পালন করতে দত্তক নিয়েছিলেন।

শেরপুর সদর সার্কেলের এএসপি আমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।