হোম কোয়ারেন্টাইন নিয়ে জামালপুরের ডিসির কঠোর অবস্থান

করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ জেলা কমিটির সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে জামালপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে বিদেশফেরত ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বাধ্য করতে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন জামালপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। ১৮ মার্চ দুপুরে তার সভাকক্ষে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ জেলা কমিটির জরুরি সভায় তার এ অবস্থানের কথা ব্যক্ত করেন। জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন কার্যালয় এ সভার আয়োজন করে।

সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ১৮ মার্চ পর্যন্ত জামালপুর জেলায় বিদেশফেরত ব্যক্তি রয়েছেন ৩৮ জন। তাদের মধ্যে ১৮ মার্চ পর্যন্ত ২৯ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনের আওতায় আনা হলেও অনেক ক্ষেত্রে তারা সরকারি নির্দেশনা মানছেন বলে শোনা যাচ্ছে। আরো অনেকেই রয়েছেন যারা হোম কোয়ারেন্টাইনে না থেকে হয়তো বাইরে ঘোরাফেরা করছেন। বৈশ্বিক করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় জেলায় হয়তো বিদেশফেরত লোকের সংখ্যা ক্রমেই বাড়বে। এই মুহূর্তে আমাদের প্রধান কাজই হবে বিদেশফেরতদের হোম কোয়ারেন্টাইন শতভাগ নিশ্চিত করা। বিদেশফেরত ব্যক্তিদের সম্পর্কে কোনোরূপ তথ্য বা অভিযোগ পেলে সাথে সাথে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরো বলেন, এখন থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার একজন করে প্রতিনিধি সার্বক্ষণিক হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের বাড়িতে গিয়ে পর্যবেক্ষণ করবেন এবং তাদের সম্পর্কে প্রতিদিন জেলা কমিটির কাছে প্রতিবেদন দিতে হবে। এছাড়াও ওই সমস্ত বাড়ির ওপর নজর রাখবে একজন করে গ্রামপুলিশ। জেলা প্রশাসক করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানান।

এছাড়াও সভায় বিদেশফেরত বা করোনার উপসর্গ থাকতে পারে এমন যেকোনো ব্যক্তিদের জন্য শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রকল্প এলাকার ছাত্রীনিবাসে স্থাপিত ১০০ শয্যার প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার এখনও প্রস্তুত নয় বিধায় জেলা প্রশাসক ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সভায় জামালপুর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক চিকিৎসক মো. হাবিবুর রহমান ফকির বাজেট না থাকার কারণে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারটি প্রস্তুত করতে সময় লাগছে বলে জানান।

এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক তাৎক্ষণিক ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ ঘোষণা দিয়ে ১৯ মার্চের মধ্যে সেখানে অন্তত ৫০টি শয্যাসহ অন্যান্য সরঞ্জাম স্থাপন করে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার প্রস্তুত রাখতে বলেন। এছাড়াও কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের জন্য একটি মেডিকেল টিম প্রস্তুত থাকারও নির্দেশ দেন।

সভায় করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ জেলা কমিটির সদস্য সচিব জামালপুরের সিভিল সার্জন চিকিৎসক গৌতম রায়, সদস্য পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান, ডেপুটি সিভিল সার্জন চিকিৎসক কে এম শফিকুজ্জামান, এনডিসি আবু আব্দুল্লাহ খান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান ছানা, জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদাসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।