সরিষাবাড়ী পাক হানাদারমুক্ত দিবস উদযাপিত

পপুলার মোড়ে বিজয় স্বরণীতে পতাকা উত্তোলন করেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসক মো. মুরাদ হাসান। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলায় বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে পাক হানাদারমুক্ত দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে ১২ ডিসেম্বর সকালে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দিবসটি পালন করে। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক অধিনায়ক মোফাজ্জল হোসেনের সভাপতিত্বে বাউসি পপুলার মোড় বিজয় স্বরণীতে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসক মো. মুরাদ হাসান।

অন্যান্যদের মাঝে আরো বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন পাঠান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিহাব উদ্দিন আহমদ, সরিষাবাড়ী পৌরসভার মেয়র রুকুনুজ্জামান রোকন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলি রোমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাদশা, সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ,  উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বেগম জহুরা লতিফ, মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে বাউসি পপুলার মোড় বিজয় স্বরণী থেকে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা কমান্ড কার্যালয়ের সম্মুখে গিয়ে শেষ হয়।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী চিকিৎসক মো. মুরাদ হাসানের নেতৃত্বে আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের এই দিনে সরিষাবাড়ী থানা হানাদারমুক্ত হয়। ৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর সমগ্র দেশ স্বাধীর হলেও তৎকালীন জামালপুর মহকুমার সরিষাবাড়ী থানা হানাদারমুক্ত হয় বিজয় দিবসের ৪ দিন আগেই। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মধ্যদিয়ে এ দেশ স্বাধীন করতে সারাদেশের ন্যায় সরিষাবাড়ীর ৭৪৪ জন দামাল ছেলে একযুগে মাতৃভূমি রক্ষায় সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন।

১১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা সংবাদ পান যে, দুই শতাধিক পাকসেনা রাজাকার-আলবদর বাহিনীর সহায়তায় জগন্নাথগঞ্জ ঘাটে অবস্থান করছে। এ সংবাদে ওই রাতেই নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন নাজিম বাহিনী, আনিস বাহিনী, রশিদ বাহিনী, লুৎফর বাহিনী ও ফজলু বাহিনী বিশেষ সাহসী ভূমিকা নিয়ে মিত্র বাহিনীর সহায়তায় যৌথ অভিযান চালায়। এ রাতে পিংনার বারইপটল ফুলদহের পাড়ায় পাক বাহিনীর গুলিতে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ মুক্তিকামীসহ ৪২ জন শহীদ হন। সারা রাতের প্রচেষ্টায় মিত্র বাহিনীর সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধারা ভোরে সকল পাক সেনাকে পাকড়াও করতে সক্ষম হন। পরদিন ১২ ডিসেম্বর সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে সরিষাবাড়ী থানা শত্রুমুক্ত ঘোষণা করা হয়।