
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠিডটকম
জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নে একটি হাফিজিয়া মাদরাসার ১২ বছর বয়সের এক ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে আটক একই মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ মো. আলা উদ্দিনকে (২৭) আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে সদর থানা পুলিশ। ওই শিশুটির বাবার দায়ের করা মামলায় ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। একই দিনে পুলিশ জামালপুর সদর হাসপাতালে ওই শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষাও করিয়েছে।
সদরের শরিফপুর ইউনিয়নের ডেঙ্গারগড় গ্রামের মোজাদ্দেদিয়া আশরাফুল উলুম হাফিজিয়া নূরানি মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ মো. আলা উদ্দিনের কক্ষে ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ বলাৎকারের ঘটনা ঘটে। ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ওই শিক্ষককে আটক করে সদর থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
যৌন নির্যতানের শিকার শিশুটির বাবার অভিযোগ, তাদের বাড়ি জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের ডেঙ্গারগড় গ্রামে। তার ১২ বছর বয়সের ছেলেটি স্থানীয় মোজাদ্দেদিয়া আশরাফুল উলুম হাফিজিয়া নূরানি মাদরাসার কোরআনে হাফেজ পড়াশোনা করে প্রায় পাঁচ বছর ধরে। সে ইতিমধ্যে কোরআনের ২৫ পারা পর্যন্ত সুরা মুখস্থ করেছে। জেলার ইসলামপুর উপজেলার পচাবহলা গ্রামের মধ্যপাড়া গ্রামের মো. তারা ম-লের ছেলে হাফেজ মো. আলা উদ্দিন চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ওই মাদরাসায় নতুন শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছেন। ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওই ছাত্র বাড়ি থেকে টিফিনক্যারিয়ারে করে শিক্ষক আলা উদ্দিনের জন্য সকালের খাবার নিয়ে মাদরাসায় যায়।
এ সময় শিক্ষক আলা উদ্দিন মাদরাসার তিন নম্বর কক্ষে বসে খাবার খান। খাওয়ার পর টিফিনক্যারিয়ারের বাটিগুলো ওই ছাত্রকে ধুয়ে আনতে বলেন। সে বাটিগুলো ধুয়ে পুনরায় শিক্ষকের কক্ষে যায়। শিক্ষক তাকে দিয়ে কক্ষের জানালা বন্ধ করায়। এরপর ওই শিক্ষক প্রথমে শিশুটির সাথে অশ্লীল আচরণ করেন এবং পরে পায়জামা খুলে জোরপূর্বক তাকে বলাৎকার করেন। শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করলে ওই শিক্ষক বলাৎকারের ঘটনা কাউকে বললে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
শিশুটি বাড়িতে ফিরে গেলে তার মন খারাপ দেখে তার বাবা কি হয়েছে বলে জানতে চাইলে ভয়ে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। এক পর্যায়ে শিশুটি তার বাবার কাছে ঘটনা খুলে বলে। এ ঘটনা জানতে পেরে বিক্ষুব্ধ প্রতিবেশীরা ১৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে শিক্ষক আলা উদ্দিনকে ওই মাদরাসায় আটক করে সদর থানায় খবর দেন। পরে সদর থানা পুলিশ ওই শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় যৌন নির্যাতনের শিকার ওই শিশুটির বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শিক্ষক আলা উদ্দিনকে আসামি করে ১৪ সেপ্টেম্বর রাতেই জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জহিরুল ইসলাম ১৫ সেপ্টেম্বর বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, মাদরাসাছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে আটক ওই মাদরাসার শিক্ষক আলা উদ্দিনকে আজ দুপুরে জামালপুর সদর আমলি আদালতের বিচারকের আদেশে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। যৌন নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।