নিরাপদ খাদ্য আন্দোলনের নায়ক বকশীগঞ্জের ময়েজ উদ্দিন

ময়েজ উদ্দিন

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

ময়েজ উদ্দিন, জামালপুরের বকশীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকাসহ বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে তার আনাগোনা। তিনি বকশীগঞ্জে সুনাম ধন্য সওদাগর বাড়ির জামাতা। মরহুম আব্দুর রশীদ (ভুলু সওদাগর) এর মেয়ে জামায়। সেই সুবাধে সওদাপাড়াতেই বসবাস করেন তিনি।

বয়স প্রায় ৬০ ছুই ছুই । তাকে দেখলেই অনেকেই এড়িয়ে চলতে চায়। কারণ কয়েকজন লোক একজায়গায় সমবেত হওয়া দেখলেই সেখানেই ছুটে যান ময়েজ উদ্দিন।

আলোচনায় মত্ত হয়ে উঠেন ভেজালবিরোধী খাদ্য নিয়ে। আলোচনার মূল বিষয় বিশেষ করে চিনি ও গুড় নিয়ে। গুড়ে ভেজাল, (হাইড্রোজ মিশিয়ে গুড় সাদাকরণ) বিষয়টি কোনোভাবেই মানতে চান না ময়েজ উদ্দিন। এ কারণে অনেকেই ময়েজউদ্দিনকে হাইড্রোজ বলে সম্মোধন করে থাকেন।

খাবারে মেশানো রাসায়নিক পদার্থকে হারাম আখ্যা দিয়ে পূর্বের ন্যায় আখ মাড়াই এর পক্ষে তিনি।

এর কারণ হিসাবে তিনি জানান, পূর্বে নিভের্জালভাবে গুড় তৈরি হতো। কিন্তু এখন দাম বেশি পাওয়ার লোভে গুড়ের মধ্যে রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রণ করা হয়। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম হুমকি।

জানা যায়, পূর্বে কলকুঠির মাধ্যমে গরু দিয়ে আখ মাড়াই হতো। এই কলকুঠির এজেন্ট ছিল ময়েজ উদ্দিনের বাবা শেখ আজির উদ্দিন। বংশ পরম্পরায় সেই কলকুঠির এজেন্টশিপ পায় ময়েজ উদ্দিন।

বাবার সাথে কলকুঠির ব্যবসা করতে সুর্য্যনগর আসেন ময়েজ উদ্দিন। ব্যবসার জমজমাট অবস্থায় তৎকালীন সুনামধন্য ভুলু সওদাগরের মেয়ের সাথে বিয়েও হয়। ব্যস্ততা ও ব্যবসায়ীক কারণে বকশীগঞ্জেই থাকতে হয় ময়েজ উদ্দিনকে। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে কলকুঠির মাধ্যমে আখ মাড়াই বিলুপ্ত হয়। সোনালী অতীতের সেই দিনের কথা ভুলতেই পারেন না ময়েজ উদ্দিন।

প্রতিদিন তার রুটিন কাজ হলো বকশীগঞ্জ বাসস্ট্যন্ড এলাকায় গিয়ে পত্রিকা সংগ্রহ করা। ভেজাল খাদ্য সংক্রান্ত সংবাদ দেখলেই খুশির অন্ত থাকে না ময়েজ উদ্দিনের।

বকশীগঞ্জের মানুষকে সুস্থ্য রাখতে ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে একাই সংগ্রাম করে যাচ্ছেন ময়েজ উদ্দিন। প্রতিদিন মানুষকে ভেজাল খাদ্য নিয়ে সচেতন করে যাচ্ছেন তিনি। যদিও এ নিয়ে অনেকেরই কটু কথাও হজম করতে হয় ময়েজ উদ্দিনকে। তার পরেও থেমে নেই ময়েজ উদ্দিন। তবে সরকারের ভেজালবিরোধী কর্মকাণ্ডে ময়েজ উদ্দিনের মতো একজন আন্দোলনকারীকে সম্পৃক্ত করলে খাদ্যে ভেজাল অনেকাংশে কমে যাবে বলে বিশ্বাস করেন সাধারণ জনগণ ।

sarkar furniture Ad
Green House Ad