ঢাকা ০৭:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
প্রগতিশীলতা, অসাম্প্রদায়িকতা চর্চায় মির্জা সাহেব ও তার ‘সাপ্তাহিক তওফিক’ বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানালো যুক্তরাষ্ট্র পুরো সংস্কার করবে নির্বাচিত সরকার : জয়নুল আবদীন ফারুক পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ১৬০ বছরের ইতিহাসে পুলিশ এত বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়নি : পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম হাটচন্দ্রায় মাকে হত্যা, ছেলে গ্রেপ্তার ইসলামপুরে এক মাদরাসা শিক্ষক বহিষ্কার গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের মালিকানা কমানো হয়েছে : রিজওয়ানা ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাতে চান নেতানিয়াহু, ট্রাম্পের না গাজা উপত্যকায় গত দিনে ইসরাইলি হামলায় ৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত

‘আরে ভাই এসব নিউজ টিউজ দিয়ে কি হবে’

শেরপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ উদ্দিন। ছবি : বাংলারচিঠি ডটকম

শেরপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ উদ্দিন। ছবি : বাংলারচিঠি ডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠি ডটকম

আরে ভাই এসব নিউজ টিউজ দিয়ে কি হবে। বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার করা শিক্ষা প্রকৌশলীর দায়িত্ব। এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। কথাগুলো বলছিলেন, শেরপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তার নাম সৈয়দ উদ্দিন। আসছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে প্রতিবেদন তৈরি করতে ১৪ জানুয়ারি সকালে এ প্রতিবেদক ওই কর্মকর্তার কাছে শহীদ মিনার সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, জেলায় কতগুলো বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার আছে বা নেই সে সম্পর্কিত তথ্য সরকারের কাছে থাকবে। এটা আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।

একটু পরেই নিজেকে সামলে নিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি আমার কার্যালয় থেকে শহীদ মিনার সম্পর্কে তথ্য চেয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কতদিন আগে চিঠি পাঠানো হয়েছে এর উত্তরে প্রায় তিন মাস আগে পাঠানোর কথা জানান সৈয়দ উদ্দিন। ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সরকারি কোনো অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় না। স্থানীয়ভাবে স্কুলের অর্থায়নে ম্যানেজিং কমিটির উদ্যোগে শহীদ মিনার নির্মিত হয়।

তথ্যমতে, শেরপুর সদরসহ নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলা নিয়ে গঠিত এ জেলা। এই পাঁচটি উপজেলায় মোট ১৮১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বেশিরভাগ বিদ্যালয়েই ভাষা শহীদদের স্মরণে নেই কোন শহীদ মিনার। কিছু বিদ্যালয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে দিবসটি পালন করা হলেও বেশিরভাগ বিদ্যালয়ে দিবসটি পালনই করা হয় না। আবার অনেক প্রতিষ্ঠানে শুধু জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রেখেই দায়িত্ব সারেন শিক্ষকরা।

সম্প্রতি সরেজমিনে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাতেগোনা কয়েকটি বিদ্যালয় ব্যতিত বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই কোনো শহীদ মিনার। প্রতি বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় শুধু আলোচনা সভা বা মিলাদ মাহফিল করে দিবসটি পালন করা হয়। আবার কিছু প্রতিষ্ঠানে তা-ও করা হয় না।

ঝিনাইগাতীর চেঙ্গুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজগর আলী বলেন, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কোনো শহীদ মিনার না থাকায় প্রতি বছর ভাষা শহীদদের স্মরণে টুকরো কাঠ দিয়ে তৈরি একটি প্রতীকি শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় শিক্ষার্থীরা। জনপ্রতিনিধি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে বেশ কয়েকবার শহীদ মিনার স্থাপনের বিষয়ে লিখিত ও মৌখিকভাবে জানানো হলেও আজও হয়নি শহীদ মিনার।

ওই বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সাইদ মিয়া জানায়, একুশে ফেব্রুয়ারির দিন স্কুল ছুটি থাকে। ওইদিন শিক্ষকরা কাঠ দিয়ে শহীদ মিনার বানায়। সেখানেই সকল শিক্ষার্থীরা ফুল দেয়।

অভিভাবক তুষার আল নূর বলেন, বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠা আমাদের গ্রামবাসীর প্রাণের দাবি। শহীদ মিনার না থাকায় ১০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে শ্রীবরদী উপজেলা শহীদ মিনারে গিয়ে ছেলেমেয়েদের শ্রদ্ধার্ঘ দিতে হয়।

খুব দ্রুতই জেলার সবকটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মিত হবে এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

আপলোডকারীর তথ্য

প্রগতিশীলতা, অসাম্প্রদায়িকতা চর্চায় মির্জা সাহেব ও তার ‘সাপ্তাহিক তওফিক’

‘আরে ভাই এসব নিউজ টিউজ দিয়ে কি হবে’

আপডেট সময় ০৭:৫৭:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জানুয়ারী ২০১৯
শেরপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ উদ্দিন। ছবি : বাংলারচিঠি ডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠি ডটকম

আরে ভাই এসব নিউজ টিউজ দিয়ে কি হবে। বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার করা শিক্ষা প্রকৌশলীর দায়িত্ব। এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। কথাগুলো বলছিলেন, শেরপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তার নাম সৈয়দ উদ্দিন। আসছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে প্রতিবেদন তৈরি করতে ১৪ জানুয়ারি সকালে এ প্রতিবেদক ওই কর্মকর্তার কাছে শহীদ মিনার সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, জেলায় কতগুলো বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার আছে বা নেই সে সম্পর্কিত তথ্য সরকারের কাছে থাকবে। এটা আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।

একটু পরেই নিজেকে সামলে নিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি আমার কার্যালয় থেকে শহীদ মিনার সম্পর্কে তথ্য চেয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কতদিন আগে চিঠি পাঠানো হয়েছে এর উত্তরে প্রায় তিন মাস আগে পাঠানোর কথা জানান সৈয়দ উদ্দিন। ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সরকারি কোনো অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় না। স্থানীয়ভাবে স্কুলের অর্থায়নে ম্যানেজিং কমিটির উদ্যোগে শহীদ মিনার নির্মিত হয়।

তথ্যমতে, শেরপুর সদরসহ নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলা নিয়ে গঠিত এ জেলা। এই পাঁচটি উপজেলায় মোট ১৮১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বেশিরভাগ বিদ্যালয়েই ভাষা শহীদদের স্মরণে নেই কোন শহীদ মিনার। কিছু বিদ্যালয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে দিবসটি পালন করা হলেও বেশিরভাগ বিদ্যালয়ে দিবসটি পালনই করা হয় না। আবার অনেক প্রতিষ্ঠানে শুধু জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রেখেই দায়িত্ব সারেন শিক্ষকরা।

সম্প্রতি সরেজমিনে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাতেগোনা কয়েকটি বিদ্যালয় ব্যতিত বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই কোনো শহীদ মিনার। প্রতি বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় শুধু আলোচনা সভা বা মিলাদ মাহফিল করে দিবসটি পালন করা হয়। আবার কিছু প্রতিষ্ঠানে তা-ও করা হয় না।

ঝিনাইগাতীর চেঙ্গুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজগর আলী বলেন, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কোনো শহীদ মিনার না থাকায় প্রতি বছর ভাষা শহীদদের স্মরণে টুকরো কাঠ দিয়ে তৈরি একটি প্রতীকি শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় শিক্ষার্থীরা। জনপ্রতিনিধি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে বেশ কয়েকবার শহীদ মিনার স্থাপনের বিষয়ে লিখিত ও মৌখিকভাবে জানানো হলেও আজও হয়নি শহীদ মিনার।

ওই বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সাইদ মিয়া জানায়, একুশে ফেব্রুয়ারির দিন স্কুল ছুটি থাকে। ওইদিন শিক্ষকরা কাঠ দিয়ে শহীদ মিনার বানায়। সেখানেই সকল শিক্ষার্থীরা ফুল দেয়।

অভিভাবক তুষার আল নূর বলেন, বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠা আমাদের গ্রামবাসীর প্রাণের দাবি। শহীদ মিনার না থাকায় ১০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে শ্রীবরদী উপজেলা শহীদ মিনারে গিয়ে ছেলেমেয়েদের শ্রদ্ধার্ঘ দিতে হয়।

খুব দ্রুতই জেলার সবকটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মিত হবে এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।