সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের প্রতি দাবি মামুনের

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন। ছবি : বাংলারচিঠি ডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠি ডটকম

জামালপুর-৫ (সদর) আসনের বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন এ আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. মোজাফফর হোসেনের সমর্থক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগ করেছেন। তিনি ১৯ ডিসেম্বর দুপুরে শহরের সরদারপাড়া নিউ কলেজ রোডে তার নির্বাচনী প্রচারণার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জামালপুর সদরসহ সারা জেলায় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির জন্য প্রশাসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধও জানান।

ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকে জামালপুর সদর আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. মোজাফফর হোসেনের সমর্থক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সদর আসনের বিভিন্ন স্থানে ধানের শীষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে। তারা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মী ও ধানের শীষ প্রতীকের সমর্থকদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করেন, ১৮ ডিসেম্বর দুপুরে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর উপস্থিতিতে জামালপুর পৌরসভার হাটচন্দ্রায় বিএনপির নির্বাচনী প্রচার কেন্দ্রে হামলা ও ভাংচুর, রাতে স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেল বহর নিয়ে পৌরসভার রামনগর এলাকায় সাত রাস্তার মোড়ে বিএনপির একটি নির্বাচনী প্রচার কেন্দ্র ভাংচুর, একই দিনে রশিদপুর ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থক চিকিৎসক ফারুকের ওষুধের দোকান, আমির উদ্দিনের ওষুধের দোকান ও আনিছুর রহমানের স-মিলসহ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর এবং দিগপাইত ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর, একই দিনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শাহবাজপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে মহড়া দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও গোটা ইউনিয়নের ধানের শীষ প্রতীকের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। তারা ওই ইউনিয়নের পক্ষীমারী শিমুলতলা মোড় ও চাঁন্দের মোড়ের বিএনপির নির্বাচনী প্রচারকেন্দ্র ভাংচুর করেছে। এ ছাড়া জামালপুর পৌরসভার বেলটিয়া পুলিশ লাইন্স মোড়ের নির্বাচনী প্রচার কেন্দ্র ভাংচুর করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট হোক আমরা এটাই চাই। তাই আমরা আন্তরিকভাবে চাচ্ছি যে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। ভোটের মালিক জনগণ। ভোট জনগণ কোথায় দিবে সেটা জনগণই নির্ধারণ করবে। আমরা যদি সেই ভোটের সুযোগ করে না দিতে পারি। আজকে যে বাস্তবতা। এই নির্বাচন যদি কোনো কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এই জাতির ভবিষ্যত আগামী দিনে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। এর জন্যই আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এতো প্রতিকূলতার মধ্যেও আমাদের নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া দুরূহ হয়ে পড়েছে। আমরা দীর্ঘ দিন ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে কাজ করছি।

শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন আরো বলেন, আমরা মানুষের কাছে যাচ্ছি। তাদের একটাই প্রশ্ন আমরা আসলে ভোট দিতে পারবো কিনা। আমাদের ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেন। এই যে আতঙ্ক। এই আতঙ্ক বিরাজমান থাকলে প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন কতটুকু সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে শঙ্কা বাড়ছে। এ আসনের এখন পর্যন্ত ১৯টি ঘটনার অভিযোগ আমরা প্রশাসনের কাছে করেছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা প্রশাসনের ইতিবাচক ভূমিকা দেখেছি। কিন্তু তারপরও একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলেছে। জামালপুর সদরসহ সারা জেলায় একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তাই আমরা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির জন্য প্রশাসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করছি।

সংবাদ সম্মেলনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এবং জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা করেন। জামালপুর জেলার বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, স্থানীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকা, অনলাইন সংবাদপত্র এবং টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিকবৃন্দ এই সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। এ সময় ধানের শীষ প্রতীকের বিভিন্ন কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা নেতৃবৃন্দসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।