ঢাকা ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মাহমুদপুরে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু জামালপুরে নাট্যকার আব্দুল্লাহ আল মামুনের ৮৩তম জন্মদিন উদযাপিত বিচারবহির্ভূত হত্যা, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সরিষাবাড়ীতে বিক্ষোভ মিছিল বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে জামালপুর জেলা বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যা: জামালপুরে গণঅধিকার পরিষদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন বকশীগঞ্জে ৫ বছরেও উদ্বোধন হয়নি ভবন, ময়লার ভাগাড়ে পরিণত শেরপুরে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষমেলার উদ্বোধন মাদারগঞ্জে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ভাতিজা নিহত, কেটে গেছে চাচার শ্বাসনালী জামালপুর জেলা ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত মাহমুদপুরে বিদ্যুতায়িত হয়ে লাইনম্যানের মৃত্যু

দেশপ্রেম ছড়াতে পতাকা বিক্রি

পতাকা ফেরি করে বিক্রি করছেন মুক্তিযোদ্ধা মনোতুষ মন্ডল। ছবি : বাংলারচিঠি ডটকম

পতাকা ফেরি করে বিক্রি করছেন মুক্তিযোদ্ধা মনোতুষ মন্ডল। ছবি : বাংলারচিঠি ডটকম

শফিউল আলম লাভলু
নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠি ডটকম

মহান স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের মাস আসলেই নিজেকে স্থীর রাখতে পারেন না বীর মুক্তিযোদ্ধা মনোতুষ মন্ডল। এই দুই মাস ব্যাপী জাতীয় পতাকা নিয়ে সারাদেশ ব্যাপী ঘুরে বেড়ান তিনি। তিনি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বহেরাতলা গ্রামের বাসিন্দা। এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে তার ছোট সংসার। সে বর্তমানে শেরপুরের নকলা উপজেলায় অবস্থান করছেন। নতুন প্রজন্মদের মধ্যে দেশ প্রেম জাগ্রত করতে সারা দেশ ঘুরে পতাকা বিক্রি করেন মুক্তিযোদ্ধা মনোতুষ মন্ডল।

নকলা জোড়াব্রীজের উপরে মনোতুষ মন্ডলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, স্বাধীনতা ও বিজয়ের মাস আসলে সেই মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতি সামনে এসে হাজির হয়। তাই পতাকা নিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ফিরি। এই দুই মাসে সাংসারিক সব কাজ ফেলে জাতীয় পতাকা বিক্রি করলে মনে শান্তি মিলে।

তিনি জানান, মার্চ ও ডিসেম্বর মাসে প্রতিদিন গড়ে ৮০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার পতাকা বিক্রি করতে পারেন। আকার অনুযায়ী প্রতিটি পতাকার ৮০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা করে বিক্রি করা হয়। তাছাড়া হাত ও মাথা বন্ধনী ১০ টাকা থেকে ২৫ টাকা, মোটরসাইকেলসহ ছোট পরিবহনের জন্য ব্যবহার উপযোগী পতাকা বিক্রি হয় ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা করে।

মার্চ ও ডিসেম্বরে পতাকা ও পতাকা খচিত বন্ধনী বিক্রিতে যা লাভ হয়, তা একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেশের উন্নয়নে ব্যয় করেন তিনি। এরমধ্যে বৃক্ষ রোপণ, স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে পতাকা বিতরণ, যুব সমাজকে দেশের ইতিহাস সম্পর্কে অবগত করতে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যয় উল্লেখ যোগ্য।

তিনি আরও বলেন, আমি সরকারিভাবে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী পাই ১০ হাজার টাকা। ওই টাকাতেই আমার ছোট্ট সংসারের খরচ চলে। চলতি বিজয় মাস উপলক্ষে সরকার ৭ হাজার টাকা অতিরিক্ত ভাতা দিয়েছেন, ওই টাকার সাথে আরও ৫ হাজার টাকা মিলিয়ে ১২ হাজার টাকার পতাকা ও বন্ধনী কিনে শেরপুরে আসছি। শেরপুরের পঁচটি উপজেরায় তিনি ওইসব পতাকা ও বন্ধনী বিক্রি করবেন। এতে খরচ বাদে এতে অন্তত ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা লাভ হবে। এই লাভের টাকায় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে কিছু একটা করবেন বলে তিনি জানান। তবে কি করবেন তা স্পষ্ট করেননি।

মনোতুষ জানান, পতাকা বিক্রি করে সংসার চালানো তার উদ্দেশ্য নয়। দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়েই তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ পতাকা বিক্রি করে আসছেন। তবে বর্তমান প্রজন্ম দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ায় এখন বিজয় ও স্বাধীনতার মাস ছাড়াও ভাষার মাস, শোকের মাসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস উপলক্ষে পতাকা বেচা কেনা হয়।

তার আশা দেশের প্রতিটি ঘরে অন্তত একটি করে পতাকা থাকুক। তাতে করে শিশুরা কৌতুহলের বসে জিজ্ঞাসার মাধ্যমে পতাকার ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে। ফলে শিশুকাল হতেই দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠবে বলে তিনি মনে করেন। এটা তার একান্ত চাওয়া।

তিনি বলেন, আমরা বাঙ্গালি, বাংলা আমাদের ভাষা। আমরা বাঙ্গালী জাতীয়তার পরিচয় বহন করি। এটা আমাদের অহংকার। আর এই অহংকার আনয়নে এক মহান ব্যক্তির ভূমিকা অতুলনীয়। তিনি হলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর তখনকার ওই স্বাধীনতার আন্দোলনের একমাত্র দল ছিল আওয়ামী লীগ। অতএব আওয়ামী লীগ ছাড়া দেশে কোনো দল থাকুক তা তিনি চাননা। তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র থাকবে বটে, তবে নির্বাচনী দল থাকা উচিত একটাই, আর তাহল আওয়ামী লীগ। এ আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণেই নির্বাচন হওয়া উচিত। আর অন্য সবাই তথা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহীরা নির্বাচনে অংশ নিবেন, এমনটাই হওয়া উচিত বলে মনে করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মনোতুষ মন্ডল।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মাহমুদপুরে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু

দেশপ্রেম ছড়াতে পতাকা বিক্রি

আপডেট সময় ০৬:০৫:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৮
পতাকা ফেরি করে বিক্রি করছেন মুক্তিযোদ্ধা মনোতুষ মন্ডল। ছবি : বাংলারচিঠি ডটকম

শফিউল আলম লাভলু
নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠি ডটকম

মহান স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের মাস আসলেই নিজেকে স্থীর রাখতে পারেন না বীর মুক্তিযোদ্ধা মনোতুষ মন্ডল। এই দুই মাস ব্যাপী জাতীয় পতাকা নিয়ে সারাদেশ ব্যাপী ঘুরে বেড়ান তিনি। তিনি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বহেরাতলা গ্রামের বাসিন্দা। এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে তার ছোট সংসার। সে বর্তমানে শেরপুরের নকলা উপজেলায় অবস্থান করছেন। নতুন প্রজন্মদের মধ্যে দেশ প্রেম জাগ্রত করতে সারা দেশ ঘুরে পতাকা বিক্রি করেন মুক্তিযোদ্ধা মনোতুষ মন্ডল।

নকলা জোড়াব্রীজের উপরে মনোতুষ মন্ডলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, স্বাধীনতা ও বিজয়ের মাস আসলে সেই মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতি সামনে এসে হাজির হয়। তাই পতাকা নিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ফিরি। এই দুই মাসে সাংসারিক সব কাজ ফেলে জাতীয় পতাকা বিক্রি করলে মনে শান্তি মিলে।

তিনি জানান, মার্চ ও ডিসেম্বর মাসে প্রতিদিন গড়ে ৮০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার পতাকা বিক্রি করতে পারেন। আকার অনুযায়ী প্রতিটি পতাকার ৮০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা করে বিক্রি করা হয়। তাছাড়া হাত ও মাথা বন্ধনী ১০ টাকা থেকে ২৫ টাকা, মোটরসাইকেলসহ ছোট পরিবহনের জন্য ব্যবহার উপযোগী পতাকা বিক্রি হয় ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা করে।

মার্চ ও ডিসেম্বরে পতাকা ও পতাকা খচিত বন্ধনী বিক্রিতে যা লাভ হয়, তা একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেশের উন্নয়নে ব্যয় করেন তিনি। এরমধ্যে বৃক্ষ রোপণ, স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে পতাকা বিতরণ, যুব সমাজকে দেশের ইতিহাস সম্পর্কে অবগত করতে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যয় উল্লেখ যোগ্য।

তিনি আরও বলেন, আমি সরকারিভাবে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী পাই ১০ হাজার টাকা। ওই টাকাতেই আমার ছোট্ট সংসারের খরচ চলে। চলতি বিজয় মাস উপলক্ষে সরকার ৭ হাজার টাকা অতিরিক্ত ভাতা দিয়েছেন, ওই টাকার সাথে আরও ৫ হাজার টাকা মিলিয়ে ১২ হাজার টাকার পতাকা ও বন্ধনী কিনে শেরপুরে আসছি। শেরপুরের পঁচটি উপজেরায় তিনি ওইসব পতাকা ও বন্ধনী বিক্রি করবেন। এতে খরচ বাদে এতে অন্তত ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা লাভ হবে। এই লাভের টাকায় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে কিছু একটা করবেন বলে তিনি জানান। তবে কি করবেন তা স্পষ্ট করেননি।

মনোতুষ জানান, পতাকা বিক্রি করে সংসার চালানো তার উদ্দেশ্য নয়। দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়েই তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ পতাকা বিক্রি করে আসছেন। তবে বর্তমান প্রজন্ম দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ায় এখন বিজয় ও স্বাধীনতার মাস ছাড়াও ভাষার মাস, শোকের মাসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস উপলক্ষে পতাকা বেচা কেনা হয়।

তার আশা দেশের প্রতিটি ঘরে অন্তত একটি করে পতাকা থাকুক। তাতে করে শিশুরা কৌতুহলের বসে জিজ্ঞাসার মাধ্যমে পতাকার ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে। ফলে শিশুকাল হতেই দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠবে বলে তিনি মনে করেন। এটা তার একান্ত চাওয়া।

তিনি বলেন, আমরা বাঙ্গালি, বাংলা আমাদের ভাষা। আমরা বাঙ্গালী জাতীয়তার পরিচয় বহন করি। এটা আমাদের অহংকার। আর এই অহংকার আনয়নে এক মহান ব্যক্তির ভূমিকা অতুলনীয়। তিনি হলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর তখনকার ওই স্বাধীনতার আন্দোলনের একমাত্র দল ছিল আওয়ামী লীগ। অতএব আওয়ামী লীগ ছাড়া দেশে কোনো দল থাকুক তা তিনি চাননা। তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র থাকবে বটে, তবে নির্বাচনী দল থাকা উচিত একটাই, আর তাহল আওয়ামী লীগ। এ আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণেই নির্বাচন হওয়া উচিত। আর অন্য সবাই তথা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহীরা নির্বাচনে অংশ নিবেন, এমনটাই হওয়া উচিত বলে মনে করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মনোতুষ মন্ডল।