
বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠি ডটকম
জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় অভাবের তাড়নায় নিজের গর্ভের অনাগত সন্তান বিক্রি করা রাবেয়ার সব ঋণ পরিশোধ করেছে উপজেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে তাকে একটি মাতৃত্বকালীণ ভাতার কার্ড প্রদান করা হয়েছে।
৬ নভেম্বর বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেওয়ান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম রাবেয়ার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে তাকে ভাতার কার্ড প্রদান করেন। এ সময় বকশীগঞ্জ থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মাহবুবু আলম, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের সুপারভাইজার সুশান্ত কুমার চক্রবর্তীসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের রবিয়ারচর গ্রামের দম্পত্তি জাহাঙ্গীর ও রাবিয়া বেগম। ১৭ বছর দাম্পত্য জীবনে চারটি সন্তান লাভ করেন তারা। ভূমিহীন এই দম্পত্তির সন্তান বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে অভাবও সমান তালে বৃদ্ধি পায়।
মাস তিনেক আগে এনজিও আশা ও গ্রামীণ ব্যাংকের নিকট থেকে সাপ্তাহিক কিস্তিতে ৭০ হাজার টাকা ঋণ নেন তারা। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে স্ত্রী সন্তান রেখে পালিয়ে যায় জাহাঙ্গীর।
ঋণ থেকে বাঁচতে নিজের গর্ভের অনাগত সন্তান বিক্রি করেন রাবেয়া। ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা রাবিয়া নিজের নিঃসন্তান বোন দিলারী বেগমের নিকট ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন তার অনাগত সন্তান। সন্তান ভুমিষ্টের আগেই ৫ হাজার টাকা অগ্রিম নেন তিনি। বাকী টাকা সন্তান ভুমিষ্ঠ হওয়ার পর দেওয়ার কথা ছিল। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দ্রুত রাবেয়ার বাড়িতে যান ইউএনও দেওয়ান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। পরে কিছুদিন পরেই রাবেয়া একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন।
অবশেষে ৫ নভেম্বর আশা ও গ্রামীণ ব্যাংকের সমস্ত ঋণের টাকা পরিশোধ করেন ইউএনও। একই সঙ্গে মহিলা বিষয়ক দপ্তর থেকে তার জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতার ব্যবস্থা করা হয়।