
নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর ॥
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। ওই কিশোরীর দরিদ্র বাবা বাদী হয়ে ১৬ জুলাই দেওয়ানগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এরপর থেকে ওই শিক্ষক পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ১৮ জুলাই দুপুরে বিদ্যালয় গেটে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখার গণিত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ উপজেলার ভেলামারী গ্রামের ফতেহ আলীর ছেলে। তিনি প্রায় সাত বছর ধরে ওই বিদ্যালয়ে চাকরি করে আসছেন। তিনি একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে সপ্তম শ্রেণি থেকে প্রাইভেট পড়াতেন। অষ্টম শ্রেণিতে সে টেলেন্টপুলে বৃত্তিও পায়। প্রাইভেট পড়ানোর সুযোগে শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ নানা প্রলোভন ও কৌশলে ওই ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে ওই শিক্ষক গোপনে তাকে ধারাবাহিকভাবে ধর্ষণ করে আসছিলেন। একপর্যায়ে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় ওই শিক্ষক। সর্বশেষ গত ২১ জুন ওই শিক্ষক তার নিজ বাড়িতে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন।
ওই শিক্ষক বিবাহিত হওয়ায় বাড়িতে এ নিয়ে তার স্ত্রীর সাথে কয়েকদফা ঝগড়াও হয়। সম্প্রতি তার স্ত্রী বিষপানে আত্মহত্যারও চেষ্টা করলে ঘটনা জানাজানি হয়। বিয়ে না করায় এবং প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই ছাত্রী তার পরিবারের কাছে ঘটনা খুলে বলে। ১৬ জুলাই ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে তার মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক আবুল কালাম আজাদকে আসামি করে দেওয়ানগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে ওই শিক্ষককে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকার সুশীল সমাজের ব্যানারে ১৮ জুলাই বেলা ১২টার দিকে ওই বিদ্যালয়ের গেটে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরাসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন মুখে কালো কাপড় বেঁধে মানববন্ধনে অংশ নেন।
দেওয়ানগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফজলুল করিম বাংলার চিঠি ডটকমকে বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় সে এবং তার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা শিক্ষকরাও খুবই বিব্রত অবস্থায় আছি। সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’ তিনি আরও জানান, সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ১৫ জুলাই সর্বশেষ বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। এরপর থেকেই তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন।
দেওয়ানগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আমিনুল হক এ ঘটনা প্রসঙ্গে বাংলার চিঠি ডটকমকে বলেন, ‘ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার আসামি শিক্ষক আবুল কালাম আজাদকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ১৭ জুলাই জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে।’