
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম
সামাজিক ব্যাধি হিসেবে প্রথম সারির সমস্যা এবং উন্নয়ন প্রতিবন্ধক হিসেবে চিহ্নিত বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে জামালপুর এরিয়া প্রোগ্রাম—এপি’র উদ্যোগে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৮ জুলাই সোমবার জামালপুর শহরের একটি হোটেলে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, ধর্মীয় নেতা, ইউনিয়ন ও পৌরসভা বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের সাথে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন উন্নয়ন সংঘের জামালপুর এরিয়া প্রোগ্রামের ব্যবস্থাপক মিনারা পারভীন। এতে বক্তব্য রাখেন জামালপুর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, জামালপুর সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শাহাদৎ হোসেন, উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম, ওয়ার্ল্ড ভিশন এপির এরিয়া ম্যানেজার সাগর ডি কস্তা, ইউপি সদস্য মুসলিম উদ্দিন, স্বপন ফকির, সারা বেগম, ধর্মীয় নেতা মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উন্নয়ন সংঘের এপির সিডিও সাব্বির হাসান।
দিনব্যাপী সমন্বয় সভায় বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, নারী প্রতিনিধি, এনজিও কর্মীসহ ৬৩ জন উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা বাল্যবিয়ের কুফল আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু, রক্তস্বল্পতা, রক্তশূন্যতা, তালাক, বহুবিবাহ, হত্যা, আত্মহত্যা, নারী, শিশু নির্যাতন, যৌতুকসহ নানা ধরনের সামাজিক, পারিবারিক ও স্বাস্থ্যগত ব্যাধি সৃষ্টিকারী বাল্যবিয়ে প্রতিরোধের আর কোন বিকল্প নেই। এর জন্য অভিভাবকসহ সমাজের প্রতিটি নাগরিককে সচেতন হতে হবে।
এক্ষেত্রে বক্তারা বলেন, ধর্মের আলোকে মসজিদসহ অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বয়ান করা, বিদ্যালয়ে ছাত্র ও ছাত্রীদের মাঝে উদ্বুদ্ধমূলক আলোচনা করা, গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠকের আয়োজন করা, লিফলেট, পোস্টার, মাইকিংসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা, ১৮ বছরের আগে স্মার্টফোন ও ফেসবুক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা, বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন কার্যকর করাসহ বক্তারা বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, ওয়ার্ল্ড ভিশন ও উন্নয়ন সংঘের যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত জামালপুর এরিয়া প্রোগ্রামটি সদর উপজেলার শরীফপুর, লক্ষ্মীরচর ইউনিয়ন ও জামালপুর পৌরসভার চারটি ওয়ার্ডে বাস্তবায়নাধীন আছে। ১০ বছর মেয়াদী এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে আর্থিক সহায়তা করছে মালয়েশিয়া ও হংকং। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে কর্ম এলাকার শিশুরা সর্বোত্তম সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়ে জাগ্রত হবে। অভিভাবকদের জীবিকায়নে নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনায় সকলের অংশগ্রহণ চলমান থাকবে। এলাকাবাসী স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও ওয়াস সচেতনতা এবং পরিবেশবান্ধব এলাকা গঠনে সবাই ধারাবাহিকভাবে অবদান রাখবে।