জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় ট্রাকচালক রিপন মিয়াকে (৪২) গরুচুরির অপবাদে পরিকল্পিতভাবে হত্যার ঘট বিচারের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের পলাশী বাজারে পরিবারের স্বজন ও স্থানীয়রা এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নিহতের ভাই ফরিদ মিয়া, তপন মিয়া, শাহীন, ফুপু মঞ্জুয়ারা ও ভাবী নারগীস প্রমুখ। এ সময় ফরিদ মিয়া বলেন, উপজেলার রেহাই পলাশতলা এলাকার মৃত কছর আলীর ছেলে প্রবাসী মওলানা (৩৫) সৌদি আরবে থাকতেন। চার বছর আগে তার স্ত্রীর সাথে ট্রাকচালক রিপন মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক হয়।
বিষয়টি জানাজানি হলে রিপন মিয়া ঢাকায় চলে যান এবং তিন বছর পর মওলানা সৌদি আরব থেকে ফিরে আসেন। ছয় মাস আগে রিপন মিয়া আবার নিজ এলাকায় ফিরে আসেন। এরপর তাদের প্রেমের বিষয়টি নিয়ে প্রবাসী মওলানার সাথে রিপন মিয়ার একাধিকবার কথা কাটাকাটি হয়। এবং তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আক্রোশের জেরে ট্রাকচালক রিপন মিয়া গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে একই এলাকার চার ভাই মওলনা, বুরহান, রাজু, দিলুসহ তাদের লোকজন পরিকল্পিতভাবে রিপন মিয়াকে আটক করেন। তারা তাকে টেনেহিচড়ে বুরহানের বাড়িতে নিয়ে রশি দিয়ে গাছের সাথে বেধে রাখেন।
পরে তাকে গরুচুরির অপবাদ দিয়ে গাছের সাথে বাধা অবস্থায় তাকে বাঁশ ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এ সময় রিপন মিয়ার চিৎকারে তার বাবা মোজাম্মেল হক, ভাই ফরিদ মিয়া, তপন মিয়াসহ পরিবার ও স্বজনেরা তাকে উদ্ধারের জন্য গেলে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে তারা মেলান্দহ থানায় গিয়ে রিপন মিয়াকে উদ্ধারের জন্য পুলিশের সহায়তা চান। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ রিপন মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে।
ঘটনার পরদিন ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এ ঘটনায় মেলান্দহ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে থানায় যান স্বজনেরা। কিন্তু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাদের মামলা না নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করার কথা বলেন। মানববন্ধন থেকে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা। পরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
প্রসঙ্গত, নিহতের বাবা মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে ১৪ জনের নামে ও অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও সাত থেকে আটজনের বিরুদ্ধে ৯ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার জামালপুর আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।