ঢাকা ০৭:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

বন্ধুকে হত্যার দায়ে এক আসামি বন্ধুর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

জামালপুর : জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরে ৩২ বছর আগে এক বন্ধুকে হত্যার অপরাধে একজন আসামির বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ও চারজনকে বেকসুর খালাসের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. আবুবকর ছিদ্দিক এই রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত হাফিজুর রহমান সরিষাবাড়ী উপজেলার ঢুরিয়াভিটা গ্রামের মৃত রুহুল আমীনের ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালের ২৩ মে রবিবার বিকালে সরিষাবাড়ী উপজেলার ঢুরিয়াভিটা গ্রামের হাফিজুর রহমান তার বাল্যবন্ধু মোজাম্মেল হক মোজাফফরকে তার বাড়ি থেকে দাওয়াত খাওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যায় আসামিরা। এরপর থেকে মোজাম্মেল হক মোজাফফর নিখোঁজ ছিলেন। নিখোঁজের পরের দিন জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের হাসিল পারিল গৌরিপুর গ্রামে কাঁচা রাস্তার উপর একটি মরদেহের সন্ধান মিলে।

পুলিশ ওই মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে অজ্ঞাত পরিচয়ে দাফন করে। ওই বছরের ২৫ মে মঙ্গলবার জামালপুর সদর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। মোজাম্মেল হক মোজাফফরকে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তার ভাই শাহজাহান ১৯৯৩ সালের ২৮ মে শুক্রবার মেষ্টা ইউনিয়নে মরদেহ পাওয়ার খবর পান। তিনি থানায় গিয়ে নিহতের ছবি ও জব্দ মালামাল দেখে তার ভাইকে শনাক্ত করেন।

এ ঘটনায় সরিষাবাড়ী উপজেলার ঢুরিয়াভিটা গ্রামের মৃত রুহুল আমীনের ছেলে হাফিজুর রহমান, গোবিন্দ নগর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান, জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া দেওয়ানিপাড়া গ্রামের মৃত নিজার উদ্দিনের ছেলে শওকত আলী, সরিষাবাড়ী উপজেলার পাখাডুবি গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে গোলাম রব্বানী, একই এলাকার জসীম উদ্দিনের ছেলে ওমর আলী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক মোজাফফরকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। ১৯৯৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

পরবর্তীতে ২০০০ সালের ১১ অক্টোবর বুধবার ওই পাঁচ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র গঠিত হয়। মামলায় ৩১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষের ভিত্তিতে দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২২ এপ্রিল রায় ঘোষণা করেন বিচারক। সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সরিষাবাড়ী উপজেলার ঢুরিয়াভিটা গ্রামের মৃত রুহুল আমীনের ছেলে হাফিজুর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে দুই মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে রায় দেন বিচারক। রায় ঘোষণার সময় আসামি হাফিজুর রহমান আদালতের এজলাসে উপস্থিত না থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। বাকি চারজন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেন আদালত।

জনপ্রিয় সংবাদ

গরুচুরির অপবাদে ট্রাকচালককে পিটিয়ে হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

বন্ধুকে হত্যার দায়ে এক আসামি বন্ধুর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

আপডেট সময় ০৪:৪৭:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

জামালপুরে ৩২ বছর আগে এক বন্ধুকে হত্যার অপরাধে একজন আসামির বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ও চারজনকে বেকসুর খালাসের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. আবুবকর ছিদ্দিক এই রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত হাফিজুর রহমান সরিষাবাড়ী উপজেলার ঢুরিয়াভিটা গ্রামের মৃত রুহুল আমীনের ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালের ২৩ মে রবিবার বিকালে সরিষাবাড়ী উপজেলার ঢুরিয়াভিটা গ্রামের হাফিজুর রহমান তার বাল্যবন্ধু মোজাম্মেল হক মোজাফফরকে তার বাড়ি থেকে দাওয়াত খাওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যায় আসামিরা। এরপর থেকে মোজাম্মেল হক মোজাফফর নিখোঁজ ছিলেন। নিখোঁজের পরের দিন জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের হাসিল পারিল গৌরিপুর গ্রামে কাঁচা রাস্তার উপর একটি মরদেহের সন্ধান মিলে।

পুলিশ ওই মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে অজ্ঞাত পরিচয়ে দাফন করে। ওই বছরের ২৫ মে মঙ্গলবার জামালপুর সদর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। মোজাম্মেল হক মোজাফফরকে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তার ভাই শাহজাহান ১৯৯৩ সালের ২৮ মে শুক্রবার মেষ্টা ইউনিয়নে মরদেহ পাওয়ার খবর পান। তিনি থানায় গিয়ে নিহতের ছবি ও জব্দ মালামাল দেখে তার ভাইকে শনাক্ত করেন।

এ ঘটনায় সরিষাবাড়ী উপজেলার ঢুরিয়াভিটা গ্রামের মৃত রুহুল আমীনের ছেলে হাফিজুর রহমান, গোবিন্দ নগর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান, জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া দেওয়ানিপাড়া গ্রামের মৃত নিজার উদ্দিনের ছেলে শওকত আলী, সরিষাবাড়ী উপজেলার পাখাডুবি গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে গোলাম রব্বানী, একই এলাকার জসীম উদ্দিনের ছেলে ওমর আলী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক মোজাফফরকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। ১৯৯৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

পরবর্তীতে ২০০০ সালের ১১ অক্টোবর বুধবার ওই পাঁচ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র গঠিত হয়। মামলায় ৩১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষের ভিত্তিতে দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২২ এপ্রিল রায় ঘোষণা করেন বিচারক। সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সরিষাবাড়ী উপজেলার ঢুরিয়াভিটা গ্রামের মৃত রুহুল আমীনের ছেলে হাফিজুর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে দুই মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে রায় দেন বিচারক। রায় ঘোষণার সময় আসামি হাফিজুর রহমান আদালতের এজলাসে উপস্থিত না থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। বাকি চারজন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেন আদালত।