ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক থেকে হয় বিয়ে। এরপর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা জানতে পেরে নিজের স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার এক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে। তালাকের খবর শুনে ভুক্তভোগী ওই নারী সংবাদ সম্মেলন করতে চাইলে পুনরায় ভুয়া কাবিননামা করে ওই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা।
বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও পৌর এলাকার টিকরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে ২১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকাল ১০টায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন শেফালী বেগম (৩৮) নামের এক নারী।
বকশীগঞ্জ পৌর এলাকার মাঝপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে শেফালী বেগম বলেন, ২০২৩ সালে জীবিকার তাগিদে আমি সৌদি আরবে যাই। সেখানে কর্মরত থাকা অবস্থায় টিকরকান্দি গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে আমার ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে আব্দুল্লাহ আল মামুন আমাকে বিয়ের কথা বলে আমাকে দেশে ফিরে আসতে বলেন। আমি তার কথায় বিশ্বাস করে দেশে ফিরলে তিনি আমাকে গত বছরের ২৪ জুন সোমবার কাবিনমূলে বিয়ে করেন।
শেফালী বেগম আরও বলেন, বিয়ের পর জানতে পারি আব্দুল্লাহ আল মামুন বিবাহিত। আমি তাকে তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে তিনি বাড়িতে না নিয়ে উল্টো আমার কাছ থেকে কৌশলে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন এবং আমাকে বাচ্চা নিতে বলেন। পরে আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি তাকে জানাই। এটা শুনেই তিনি রেগে যান। পেটের বাচ্চা নষ্ট করতে বলেন। আমি বাচ্চা নষ্ট করতে না চাইলে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার আমাকে গোপনে তালাক দিয়ে আমার কাছে তালাকনামা পাঠান।
তিনি আরও বলেন, আমি এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে চাইলে লোক মারফতে জানতে পেরে গত ১ জানুয়ারি বুধবার আব্দুল্লাহ আল মামুন আবারও আমাকে শ্রীবরদী উপজেলার এক কাজির মাধ্যমে বিয়ে করেন। পরে জানতে পারি এই কাবিনটিও ছিল ভুয়া। এভাবেই আব্দুল্লাহ আল মামুন আমাকে বারবার প্রতারিত করেন। তিনি এখন আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। আমি বর্তমানে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমি আমার স্বামীর অধিকার চাই। অনাগত সন্তানের স্বীকৃতি চাই। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন শেফালী বেগম।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন তালাক দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। কিন্তু টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ এ প্রতিবেদককে বলেন, এ ঘটনায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।