ঢাকা ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

সরিষাবাড়ীতে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি বিপুলকে কুপিয়ে হত্যা : থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ২

সরিষাবাড়ী : আতাউর রহমান বিপুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামি আনোয়ারা বেগম ও সাজিদ ইসলাম তানজিল। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি আতাউর রহমান বিপুলকে (৫০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আল আমিন বাদী হয়ে সরিষাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। ১৮ জানুয়ারি শনিবার দুপুরে ওই দুই আসামিকে আদালতের নির্দেশে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামে আতাউর রহমান বিপুলের পিতা আনোয়ার হোসেন কালু মিয়া ও তার চাচাত ভাই তোতা মিয়ার সাথে বসতবাড়ির জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার সকালে আনোয়ার হোসেন কালু মিয়ার বসতবাড়ির আঙিনায় খড়ের পালা সরিয়ে নিতে হুমকি দেয় তোতা মিয়ার ছেলে আসাদুজ্জামান আপেল ও তার সহযোগীরা। এতে খড়ের পালা সরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানান আনোয়ার হোসেন কালু মিয়ার ছেলে আতাউর রহমান বিপুল, স্ত্রী আসমা বেগম ও পুত্রবধূ মুক্তা বেগম। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়।

একপর্যায়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় ধারালো অস্ত্র রাম দা, চাইনিজ কোড়াল, লোহার রড নিয়ে আতাউর রহমান বিপুল, মুক্তা বেগম ও আসমা বেগমের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায় আসাদুজ্জামান আপেল ও তার সহযোগীরা। এ সময় আতাউর রহমান বিপুলের ডান হাত ও ডান পা কুপিয়ে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় হামলাকারীরা। তার স্ত্রী মুক্তা বেগমের ডান হাতের তিনটি আঙুল ও বাম পায়ের রগ কেটে ফেলে তারা। এই পরিস্থিতি দেখে আতাউর রহমান বিপুলের মা আছমা বেগম ফেরাতে গেলে তারও একটি হাত ভেঙে দেয় আসাদুজ্জামান আপেল ও তার সহযোগীরা। এ সময় হামলাকারীরা সবাইকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে তাদের ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী উদ্ধার তাদেরকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাৎক্ষণিক আতাউর রহমান বিপুলকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত আছমা বেগম ও মুক্তা বেগম ঢাকায় পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

খবর পেয়ে পুলিশ আতাউর রহমান বিপুলের মরদেহ উদ্ধার করে জামালপুর মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় ১৭ জানুয়ারি রাতে নিহতের বড় ভাই আল আমিন বাদী হয়ে আসাদুজ্জামান আপেলকে প্রধান আসামি করে সরিষাবাড়ী থানায় ১০ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামি আনোয়ারা বেগম ও সাজিদ ইসলাম তানজিলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। ১৮ জানুয়ারি দুপুরে ওই দুই আসামিকে আদালতের নির্দেশে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চাঁদ মিয়া বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, জমির বিরোধ নিয়ে আতাউর রহমান বিপুলকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হলে অভিযান চালিয়ে আনোয়ারা বেগম ও সাজিদ ইসলাম তানজিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১৮ জানুয়ারি দুপুরে ওই দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলাটির অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলমান রয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

গরুচুরির অপবাদে ট্রাকচালককে পিটিয়ে হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

সরিষাবাড়ীতে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি বিপুলকে কুপিয়ে হত্যা : থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ২

আপডেট সময় ০৭:০৪:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি আতাউর রহমান বিপুলকে (৫০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আল আমিন বাদী হয়ে সরিষাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। ১৮ জানুয়ারি শনিবার দুপুরে ওই দুই আসামিকে আদালতের নির্দেশে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামে আতাউর রহমান বিপুলের পিতা আনোয়ার হোসেন কালু মিয়া ও তার চাচাত ভাই তোতা মিয়ার সাথে বসতবাড়ির জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার সকালে আনোয়ার হোসেন কালু মিয়ার বসতবাড়ির আঙিনায় খড়ের পালা সরিয়ে নিতে হুমকি দেয় তোতা মিয়ার ছেলে আসাদুজ্জামান আপেল ও তার সহযোগীরা। এতে খড়ের পালা সরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানান আনোয়ার হোসেন কালু মিয়ার ছেলে আতাউর রহমান বিপুল, স্ত্রী আসমা বেগম ও পুত্রবধূ মুক্তা বেগম। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়।

একপর্যায়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় ধারালো অস্ত্র রাম দা, চাইনিজ কোড়াল, লোহার রড নিয়ে আতাউর রহমান বিপুল, মুক্তা বেগম ও আসমা বেগমের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায় আসাদুজ্জামান আপেল ও তার সহযোগীরা। এ সময় আতাউর রহমান বিপুলের ডান হাত ও ডান পা কুপিয়ে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় হামলাকারীরা। তার স্ত্রী মুক্তা বেগমের ডান হাতের তিনটি আঙুল ও বাম পায়ের রগ কেটে ফেলে তারা। এই পরিস্থিতি দেখে আতাউর রহমান বিপুলের মা আছমা বেগম ফেরাতে গেলে তারও একটি হাত ভেঙে দেয় আসাদুজ্জামান আপেল ও তার সহযোগীরা। এ সময় হামলাকারীরা সবাইকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে তাদের ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী উদ্ধার তাদেরকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাৎক্ষণিক আতাউর রহমান বিপুলকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত আছমা বেগম ও মুক্তা বেগম ঢাকায় পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

খবর পেয়ে পুলিশ আতাউর রহমান বিপুলের মরদেহ উদ্ধার করে জামালপুর মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় ১৭ জানুয়ারি রাতে নিহতের বড় ভাই আল আমিন বাদী হয়ে আসাদুজ্জামান আপেলকে প্রধান আসামি করে সরিষাবাড়ী থানায় ১০ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামি আনোয়ারা বেগম ও সাজিদ ইসলাম তানজিলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। ১৮ জানুয়ারি দুপুরে ওই দুই আসামিকে আদালতের নির্দেশে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চাঁদ মিয়া বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, জমির বিরোধ নিয়ে আতাউর রহমান বিপুলকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হলে অভিযান চালিয়ে আনোয়ারা বেগম ও সাজিদ ইসলাম তানজিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১৮ জানুয়ারি দুপুরে ওই দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলাটির অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলমান রয়েছে।