উপজেলা নির্বাচন : মির্জা আজম এমপি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী বেলালের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন চেয়ারম্যান প্রার্থী রায়হান রহমতুল্লাহ রিমু। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

মাহমুদুল হাসান মুক্তা, নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম

সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের বিরুদ্ধে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বেলালের নাম ঘোষণা করে নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর অভিযোগসহ ঘোষিত দলীয় প্রার্থীর নাম প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৯ এপ্রিল দুপুরে জামালপুর শহরের একটি রেস্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন আওয়ামী লীগ দলীয় অন্য পাঁচজন চেয়ারম্যান প্রার্থী। অন্যদিকে অভিযোগগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন সংসদ সদস্য মির্জা আজম।

সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ প্রার্থীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে সম্প্রতি বহিষ্কৃত যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী রায়হান রহমতুল্লা রিমু।

চেয়ারম্যান প্রার্থী রায়হান রহমতুল্লা রিমু তার বক্তব্যে বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করতে উন্মুক্ত নির্বাচনের ঘোষণা দেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। দীয় সভাপতির নির্দেশনা না মেনে মাদারগঞ্জে দলীয় প্রার্থী হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বেলালের নাম ঘোষণা করেন সংসদ সদস্য মির্জা আজম। এর প্রতিবাদ করলে বাকি পাঁচজন প্রার্থীদের নানাভাবে হয়রানি ও ক্ষতিগ্রস্ত করেন মির্জা আজম এবং তার পরিবার ও অনুসারীরা। এছাড়াও মির্জা আজমের বিরুদ্ধে নির্বাচনকে প্রভাবিত করারও অভিযোগ করেন বক্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী জয়নাল আবেদীন আয়না বলেন, ওবায়দুর রহমান বেলাল টানা তিনবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন। তিনি মির্জা আজমের আজ্ঞাবহ ও মেরুদন্ডহীন বলেই তাকে বার বার চেয়ারম্যান করা হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন প্রকল্পে ১২০ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন বেলাল চেয়ারম্যান। এমন দুর্নীতিবাজ লোক আবার চেয়ারম্যান হলে মাদারগঞ্জের ক্ষতি হবে। আমরা চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছি বলে উল্টো আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে, ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।

মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী মোশাররফ হোসেন বাদল বলেন, মির্জা আজম একজন সংসদ সদস্য হয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করছেন। আমরা এখনো কেন্দ্রীয় পর্যায়ে কোনো অভিযোগ দেইনি। আজ থেকে আমাদের কার্যক্রম শুরু হলো।

চেয়ারম্যান প্রার্থী ফরিদুল ইসলাম বলেন, আমরা ৭ জন প্রার্থী উন্মুক্ত নির্বাচন চেয়েছি। কিন্তু হঠাৎ করেই এমপি মহোদয় তৃণমূলের ভোটের ঘোষণা দেন তা আমরা বর্জন করে চলে আসি। একই সাথে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান চেয়ারম্যানকে দলীয় ও অফিসিয়াল চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তাকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার পর প্রত্যেক ইউনিয়নের নেতাকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। যদি তারা ইলেকশন না করে তাদের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।

বক্তারা অতি দ্রুত দলীয় সমর্থিত প্রার্থী প্রত্যাহারের দাবি জানান।

এ সব বিষয়ে জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণার জন্য সেইদিন দলের নীতি নির্ধারকেরা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমি সেই দায়িত্ব পালন করিনি। পরে দলের ২৭০০ নেতাকর্মীদের নিয়ে ভোট গ্রহণ হয়। সেই ভোটে বিজয়ী চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিন জনের নাম ঘোষণা করা হয়। এই নাম ঘোষণার পর এখনও মাঠ উন্মুক্ত আছে। চাইলে যে কেউ প্রার্থী হতে পারেন। তারা পাঁচজন ইতিমধ্যে প্রার্থীও হয়েছেন। তাহলে বাঁধা কিভাবে আসলো? আর আমি কারো পক্ষ নেইনি। কারো পক্ষে ভোট চাইনি। আমি নির্বাচনকে প্রভাবিত করছি না। আমার নামে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন সংবাদপত্র, অনলাইন সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিকরা  অংশ নেন।