ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বীজ বপন হয়েছিল : ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

লিয়াকত হোসাইন লায়ন
ইসলামপুর প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, ভাষা আন্দোলন আমাদের বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশ এবং স্বাধিকার আন্দোলন ও স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রথম সোপান। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বীজ বপন হয়েছিল।

ধর্মমন্ত্রী একুশে ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় জামালপুরের ইসলামপুরে উপজেলা পরিষদ হলরুমে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের যে মানচিত্র প্রাচীন বাংলায় আমাদের এই ভূ-খণ্ডের এরূপ একক কোন সীমানা বা মানচিত্র ছিল না। আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানে রাষ্ট্রের যে বৈশিষ্ট বা উপাদান সেটি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ব পর্যন্ত কখনোই বাঙালিদের ছিল না।

তিনি বলেন, পালবংশ, সেন রাজবংশ, মুঘল আমল, ইউরোপীয় বণিক পর্তুগীজ, ওলন্দাজ, দিনেমার, ইংরেজ, ফেঞ্চ, ব্রিটিশ এবং সর্বশেষ পাকিস্তানীদের দ্বারা এই ভূ-খণ্ডের মানুষ শাসিত-শোষিত ও নির্যাতিত হয়েছে।

ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ধর্মমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির পূর্ব থেকেই পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা কী হবে-এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। দেশ বিভাগের পর ভাষা নিয়ে বিতর্ক আবারো জেগে উঠেছিল এবং কয়েক মাসের মধ্যেই পাকিস্তানের প্রথম মুদ্রা, ডাকটিকেট, ট্রেনের টিকেট, পোস্টকার্ড ইত্যাদি থেকে বাংলাকে বাদ দিয়ে উর্দু ও ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়।

স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরে ফরিদুল হক খান বলেন, ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পূর্ববাংলায় যে স্বাধিকার আন্দোলনের ভিত্তি রচিত হয় তার পথ ধরেই চলতে থাকে পরবর্তী আন্দোলন-সংগ্রাম যা ১৯৭১ সালে মুক্তির সংগ্রামে পূর্ণতা লাভ করে। মন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে ভাষা আন্দোলনে তৎকালীন তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা তুলে ধরেন।

পরে মন্ত্রী শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আব্দুল খালেক আকন্দ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহানুর রহমান, উপজেলা প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী আব্দুস ছালাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।