চাকুরি প্রাপ্তিতে পথ দেখাচ্ছে ‘প্রিয় শিক্ষালয়’

সুজন সেন
নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম

মানুষ ক্রমান্বয়ে প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়ছে। সকল প্রকার কার্যক্রমের পাশাপাশি পড়ালেখাও হয়ে পড়ছে প্রযুক্তিভিত্তিক। সাধারণ মানুষের ধারণা, শিক্ষা বিস্তারের দায়বদ্ধতা শুধু বই-পুস্তকের আর মোবাইল ফোন বিনোদন ছাড়া আর কিছুই না। সেই ধারণা পাল্টে দিয়েছে মোবাইলভিত্তিক অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ‘প্রিয় শিক্ষালয়’। জবস্ প্রিপারেশন এন্ড লার্নিংয়ে অ্যাপটি যাত্রা শুরুর মাত্র দশ মাসের মাথায় ৫০হাজার ইউজার ডাউনলোডের মাইলফলক অর্জন করেছে। এ উপলক্ষে ১৯ জানুয়ারি সকালে ‘প্রিয় শিক্ষালয়’ অ্যাপসয়ের প্রধান কার্যালয় শেরপুর শহরের রঘুনাথপুর এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির শুভাকাঙ্খী ও এর কুশি-লবদের উপস্থিতিতে এ মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, বেকার বান্ধব সাবস্ক্রিপশন প্রাইস প্ল্যানিং, ইউজার-ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস, বিষয়ভিত্তিক ও পরীক্ষা ভিত্তিক মডেল টেস্ট, প্রতিদিনের পড়াশোনাকে বিভাজন করে আকর্ষনীয় কোর্স প্ল্যান, বিগত ২০ বছরে আসা বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নের আর্কাইভ “প্রশ্ন ব্যাংক”, দেশের নামকরা মেন্টরদের তত্বাবধানে করা “লেকচার শীট”, খেলতে খেলতে চাকরির প্রস্তুতি নেয়ার ফিচার “কুইজ খেলুন”, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এলার্ট বেসইড ফিচার “জবস্ সার্কুলার”, সাম্প্রতিক বিষয়াবলীর আপডেট নিয়ে ফিচার “কারেন্ট অ্যাফিয়্যার্স” সহ চাকরি প্রার্থীদের নানা প্রয়োজনীয় ফিচার যুক্ত থাকায় অ্যান্ড্রয়েড এ অ্যাপটি এতো দ্রুত ইউজারদের সাড়া পায়।

অনুষ্ঠানে আগত ময়মনসিংহের আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী রেজওয়ান রহমান বলেন, অ্যাপটির মাধ্যমে অনেক বেকার শিক্ষার্থী দেখছেন আশার আলো। ইতোমধ্যে এই অ্যাপের কল্যাণে অনেকেই চাকুরির সুযোগ পেয়েছেন। গেল বছরের ২১শে ফেব্রয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে গুগল প্লেস্টোরে উন্মুক্ত হওয়ার পর ইতোমধ্যে ৫০ হাজারের বেশি বার প্লেস্টোর থেকে এই অ্যাপ ডাউনলোড হয়েছে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়ুয়া শিক্ষার্থী প্রিয়াংকা বলেন, এক্সাম হিস্টোরিসহ আরো কিছু ফিচার যুক্ত করা প্রয়োজন এই অ্যাপে। যদিও অ্যাপটি নতুন, কর্তৃপক্ষ হয়ত সেই ফিচারটিও যুক্ত করবে বলে মনে হচ্ছে। প্রতিনিয়তই তাদের কিছু না কিছু আপডেট লক্ষ্য করছি। সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে গেলে আরও ভাল কিছু হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স শেষ বর্ষে পড়ুয়া শিক্ষার্থী মুজাহিদ বিল্লাহ বলেন, প্রিয় শিক্ষালয় অ্যাপটির কথা প্রথম জানতে পারি এক বন্ধুর মাধ্যমে। তার কথাতে গুগল প্লেস্টোরে Priyoshikkhaloy লিখে সার্চ দিলে অ্যাপটি চলে আসে এবং তা ডাউনলোড করে নেই। তারপর থেকে নিয়মিত এক্সাম দিচ্ছি ওই প্লাটফর্মে। চাকুরি প্রাপ্তিতে পথ দেখাচ্ছে ‘প্রিয় শিক্ষালয়’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার ডিগ্রী সম্পন্ন করা সাবিহা দিপ্তি মিলা বলেন, একদিন ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে প্রিয় শিক্ষালয়ের একটি বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে। অনেকটা কৌতুহল নিয়েই ডাউনলোড করি অ্যাপটি। এক কথায় চমৎকার লেগেছে অ্যাপটি, ইতোমধ্যে অফারের আওতায় নাম মাত্র টাকায় নিয়ে নিয়েছি তাদের চার বছরের সাবস্ক্রিপশন প্যাকেজ প্ল্যান। ভাবছি অফলাইনে কোচিংয়ের পাশাপাশি প্রতিদিনই এক্সাম দিয়ে নিজেকে যাচাই করে নিবো এর মাধ্যমে।

শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা হারিয়াকোনা। ওই এলাকার বাসিন্দা ঝুমুর। এই অ্যাপের মাধ্যমেই হয়েছে তার চাকুরি। কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, পড়াশোনা শেষ করে শুধু চাকুরির পরীক্ষা দিয়েছি। কিন্তু চাকুরি হচ্ছিল না। পরে আমার এক বান্ধবীর কাছ থেকে প্রিয় শিক্ষালয় অ্যাপের নাম শুনি এবং ডাউনলোড করে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করি। অবশেষে সফল হই।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী প্রভাষক মহিউদ্দিন সোহেল বলেন, পড়াশোনা শেষ করে তরুণ-তরুণীরা চাকুরি পাওয়ার জন্য অস্থির সময় পার করে। এক সময় হাজার হাজার টাকা খরচ করে রাজধানী অথবা বিভাগীয় শহরে গিয়ে কোচিং করতে হয় যা ওই শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকের জন্য কষ্টকর হয়ে যায়। তাই আমরা বেকারবান্ধব শিক্ষা উদ্যোগ হিসেবে স্বল্পমূল্যে মানসম্মত কন্টেন্টে সেরা চাকরির প্রস্তুতি নিতে এই প্লাটফর্মটি রেডি করার চেষ্টা করছি ।

প্রতিষ্ঠানটির কো-ফাউন্ডার সাদুজ্জামান সাদী বলেন, অ্যাপটি চাকরি প্রার্থীদের জন্য যেন আরো উপযুক্ত হয় সে দিকটায় আমরা খেয়াল রাখছি। মোট কথা বেকারবান্ধব হবে আমাদের প্রতিষ্ঠানটি।