দেওয়ানগঞ্জে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে দিশেহারা গ্রামবাসী

দেওয়ানগঞ্জের চর আমখাওয়া ইউনিয়নের পাঠাধোয়া পাড়া নদী ভাঙ্গন এলাকা।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

বিল্লাল হোসেন মন্ডল
দেওয়ানগঞ্জ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে অসময়ে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গনে দিশাহারা হয়ে পড়েছে পাড়ের মানুষ। উপজেলার চরআমখাওয়া ইউনিয়নের পাটাধোয়াপাড়া থেকে মৌলভীরচর পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙছে ব্রহ্মপুত্র নদ। অসময়ের এই ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের সানন্দবাড়ি বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষের বসতভিটা-ফসলি জমি।

গত ১ মাসে ফসলিজমিসহ বিলীন হয়েছে বসতিবাড়িসহ ফসলী অসময়ে নদী ভাঙনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা।

১৫ জানুয়ারি সকালে সরেজমিন দেখা নদী ভাঙ্গনের দৃশ্য, সানন্দবাড়ী বাজারের পশ্চিম পাটা ধোয়াপাড়া থেকে মৌলভীরচর, মন্ডল পাড়া মুন্সিপাড়া, চুনালীপাড়া, পাটাধোয়া পাড়াসহ কয়েকটি গ্রাম রয়েছে। নদীর তীরবর্তী এলাকা ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

জানা গেছে গত দুই মাসে পাঁচ শতাধিক বসতভিটাসহ কয়েক একর ফসলি জমি, পাটাধোয়াপাড়া জামে মসজিদ ও পাটাধোয়াপাড়া নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসা নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে। নদী ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের সানন্দবাড়ী বাজার, সানন্দবাড়ী ডিগ্রি কলেজ, সানন্দবাড়ী উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সানন্দবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, মৌলভীরচর উচ্চ বিদ্যালয়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলিম মাদ্রাসা, সানারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সানন্দবাড়ী পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাটাধোয়াপাড়া মন্ডল পাড়া, মৌলভীরচর এলাকা মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

শিক্ষক মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, এ পর্যন্ত আমার বসতভিটাসহ ৬৮ বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ফসলিজমি ভেঙে যাওয়ায় খুব কষ্টে জীবনযাপন করতে হচ্ছে। এ ভাঙন অব্যাহত থাকলে ঐতিহ্যবাহী সানন্দবাড়ী বাজার, পাটাধোয়াপাড়া, মণ্ডলপাড়া ও মৌলভীরচর এলাকার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে।

সানন্দবাড়ী বাজার বণিক সমিতির সভাপতি গাজিউর রহমান বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমে বালুর চর জেগে ওঠায় পানির স্রোতে পূর্বপাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

চরআমখাওয়া ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জিয়া জানান, অসময়ে নদীতে তীব্র স্রোত আমি কখনো দেখিনি। এই তীব্র স্রোতে পূর্বপাড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। পাটাধোয়াপাড়া, মন্ডলপাড়া ও মৌলভীরচর ভাঙনের আশঙ্কায় রয়েছে। অসময়ের ভাঙন রোধ না করতে পারলে সানন্দবাড়ি বাজার বিলীন হয়ে যাবে।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, অসময়ে যে ভাঙন দেখা দিয়েছে, সেটা প্রতিরোধের জন্য একটি প্রস্তাবনা প্রেরণ করেছি। সেটা অনুমোদন হলে ওই অঞ্চলের ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।