শেখ হাসিনার সরকার বারবার দরকার : সাবেক মুখ্য সচিব আজাদ

জামালপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম :

‘যদি আমি মনোনয়ন পাই। অনুরোধ করবো। অনুরোধ করার জন্যই এসেছি। আপনারা সর্বাত্বক চেষ্টা করবেন যাতে নির্বাচনে ভোট পেয়ে জয়লাভ করতে পারি। পরে তিনি শ্লোগান ধরেন- জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনার সরকার বারবার দরকার। জয় বাংলা, জয় শেখ হাসিনা।’ বলেছেন স্মার্ট বাংলাদেশের কো-চেয়ার, বাংলাদেশ স্কাউটসের সভাপতি ও সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিপ্রায়ে জামালপুর-৫ (সদর) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেনে নতুন চমক হয়ে আসছেন সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ। ২০ নভেম্বর দুপুরে মির্জা আজম অডিটরিয়ামে জামালপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় সেই আভাস দিলেন তিনি নিজেই।

মতবিনিময় সভার বক্তৃতায় সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমি ছিলাম সরকারি কর্মচারী। আমাকে রাজনৈতিক কর্মী হতে হয়তো একটু সময় লাগবে। রাজনৈতিক কর্মী হওয়ার জন্য আপনারা হচ্ছেন আমার শিক্ষক। তবে ছাত্র হিসেবে খুব খারাপ হবো না। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। সরকারি কর্মচারী হিসেবে কাজ করলেও নেতার সঙ্গে সঙ্গে থাকার কারণে অনেক কিছুই তো শিখেও ফেলেছি। আমার সবচে গুরুত্বপূর্ণ নেতা যার কাছ থেকে আমি শিখেছি, তিনি হলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরের নেতা হচ্ছেন আপনাদের প্রাণপ্রিয় নেতা, যিনি আমারও নেতা মির্জা আজম।

তিনি আরো বলেন, দেশের উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা কিভাবে বাস্তবায়ন হবে, সেই বিষয়গুলো ভাবতে হবে। বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি-জামাত তারা কিভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড যাতে কেউ পরিচালিত করতে না পারে আমাদের প্রত্যেককে সজাগ থাকতে হবে। এই দেশটা আমার, আমাদের। এই দেশটা আমাদের সকলের। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে আমাদের প্রত্যেকের অংশগ্রহণ থাকবে। আমরা নমিনেশন কিনেছি। নমিনেশন সাবমিট করবো। যাকেই নমিনেশন দিক না কেন, আমরা প্রত্যেকেই তার জন্য কাজ করবো। নৌকার জন্য কাজ করবো।

তিনি আরো বলেন, জামালপুরের উন্নয়ন মির্জা আজমই করেছেন। আমি সরকারি কর্মচারী ছিলাম। এলাকার খাবার খেয়েছি। সেই ঋণ তো আছে। সেই ঋণ শোধ করার জন্য যখনই মির্জা আজম কোন কাজের কথা বলেছে সেখানেই চেষ্টা করেছি। যাতে দ্রতগতিতে সেই কাজটা হয়। প্রধানমন্ত্রীর আদর্শ ও নির্দেশনায় উদ্বুদ্ধ হয়েই মির্জা আজমের সাথে কাজ করেছি। ভালো কাজের শুরু আছে, ভালো কাজের শেষ নেই। জামালপুরের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু এরপরও অনেক জেলার তুলনায় আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। তার মানে আমাদের আরো অনেক কাজ করতে হবে।

সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘যদি আমি মনোনয়ন পাই। অনুরোধ করবো। অনুরোধ করার জন্যই এসেছি। আপনারা সর্বাত্বক চেষ্টা করবেন যাতে নির্বাচনে ভোট পেয়ে জয়লাভ করতে পারি। পরে তিনি শ্লোগান ধরেন- জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনার সরকার বারবার দরকার। জয় বাংলা, জয় শেখ হাসিনা।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য জামালপুর সদর আসন থেকে একাধিক নেতা দীর্ঘদিন ধরে জনমত সংগঠনে কাজ করে আসছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই দলীয় সব সম্ভাব্য প্রার্থীদের ছাপিয়ে জোরালো আলোচনায় স্থান করে নিচ্ছেন সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ। তার বাড়ি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার নলের চর গ্রামে। মুখ্য সচিব পদসহ বর্তমান সরকারের আমলে সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের সুবাদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হিসেবে স্থান করে নিয়েছেন আবুল কালাম আজাদ। জাতীয় পর্যায়ে অনেক অবদান রাখার পাশাপাশি বিগত ১৫ বছরে জামালপুর জেলার জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন ও বাস্তবায়নে তার অনেক অবদান রয়েছে। কিন্তু জামালপুর জেলা আওয়াময়ী লীগের রাজনীতিতে এমপি প্রার্থী হিসেবে তার নাম কখনোই আলোচনায় আসেনি। তফসিল ঘোষণার পর ঢাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু হওয়ার পরপরই আবুল কালাম আজাদের নামটিও উঠে আসে। জামালপুর সদর আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে তিনি ইতিমধ্যে ঢাকায় দলীয় মনোনয়নপত্রের ফরম কিনেছেন এবং জমাও দিয়েছেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জামালপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. এম এ মান্নান খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান স্বপনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকি বিল্লাহ, সহসভাপতি ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ প্রমুখ।