শরিফপুরে শতবছরের সড়কে বেড়া : অর্ধশতাধিক পরিবার অবরুদ্ধপ্রায়

বন্ধ করে দেওয়া শতবর্ষী সড়ক। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম

এ যেনো একটুকরো গাজা উপত্যকা। অবরুদ্ধ হয়ে আছে অর্ধশতাধিক পরিবারের চারশতাধিক মানুষ। প্রতিপক্ষের স্বার্থন্ধতা এবং প্রভাবের কারণে শতবছর ধরে অবাধে যাতায়াত করার গ্রামীণ সড়কটি বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে ওই এলাকার অসহায় বাসিন্দারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের গুদাসিমলা গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আরমান আলী ও তার প্রতিবেশীরা ৫০ ফুট দৈর্ঘে্যর সড়কটি মরহুম ইসমাইল ডাক্তারের সন্তানরা বন্ধ করে দেওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে। এলাকাবাসী এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান ইসমাইল ডাক্তারের বাপ, দাদার আমল থেকে পূর্বপাশের বাসিন্দারা যাতে নির্বঘ্নে চলাচল করতে পারে এ জন্য এ রাস্তাটি করা হয়। সময়ের ব্যবধানে পরবর্তী প্রজন্ম নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থের কারণে এবং জমির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় শতবছরের পুরোনো সড়কটি বন্ধ করে দেয়।

বন্ধ করে দেওয়া শতবর্ষী সড়ক। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

সত্তোরোর্ধ বয়সী আরমান মাস্টার এ প্রতিনিধিকে আবেগ আপ্লুত ভাষায় বলেন, আমরা কখনোই ভাবি নাই এ রাস্তাটি বন্ধ করে দিবে। ওদের পৈতৃক সম্মত্তি হলেও আমরা যুগ যুগ ধরে মিলেমিশে সবাই যাতায়াত করে আসছি। হঠাৎ করে এভাবে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা অবরুদ্ধ হয়ে আছি। অনেক ঘুরে চিপাগলি দিয়ে আমাদের বাইরে যেতে হয়। বর্ষাকালে ভীষণ দুর্ভোগ হয়। কারো মৃত্যু হলে লাশ বের করতে পারি না। মসজিদে, বাজারে, ছেলে, মেয়ের স্কুলে, রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াসহ স্বাভাবিক চলাচলে আমরা চরমভাবে কষ্টভোগ করে আসছি। চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছি। জামালপুর সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছি কেউ সমাধানের জন্য এগিয়ে আসছে না। আমরা জমি কিনতে চাই। ৫০ হাজার টাকার জমির মূল্য ৫ লাখ টাকা দাম চায়। আমরা রাষ্ট্রের কাছে নাগরিক হিসেবে আপনার লেখার মাধ্যমে এর একটা সুরাহা চাই।

অবরুদ্ধপ্রায় এলাকার বাড়িঘর।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

এ ব্যাপারে শরিফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যন মো. রফিকুল ইসলাম আলম জানান, শতবছরের যাতায়াতের রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হয়নি। ঘটনাটা আমি জানি। কীভাবে এর সমাধান করা যায় আমি উদ্যোগ নিবো।

এ বিষয়ে ইসমাইল ডাক্তারের বাড়িতে বিষয়টি জানার জন্য গেলে কোন পুরুষ লোক পাওয়া যায়নি।

জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটুস লরেন্স চিরান বলেন, আমি ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিষয়টি সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখবো। এতগুলো পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া দুঃখজনক। তিনি বলেন, প্রচলিত বিধান অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ থাকলে আমরা দেখবো।