দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত ও গুজব রোধে জামালপুর জেলা পুলিশের আগাম প্রস্তুতি সভা

জামালপুরে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে দুর্গাপূজার নিরাপত্তা ইস্যুতে পূর্ব প্রস্তুতিমূলক সভায় বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান, বিপিএম। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম

আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসবমুখর পরিবেশে ও নির্বিঘ্নে উদযাপনের জন্য জেলা সদরসহ জেলার সাত উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিত ও গুজব রোধে পূর্ব প্রস্তুতিমূলক সভা করেছে জামালপুর জেলা পুলিশ। ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেলে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

দুর্গাপূজার নিরাপত্তা ইস্যুতে অনুষ্ঠিত এই প্রস্তুতিমূলক সভায় সভাপতিত্ব করেন জামালপুরের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান, বিপিএম। সভার শুরুতেই আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসবমুখর পরিবেশে ও নির্বিঘ্নে উদযাপনের জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার আগাম প্রস্তুতি ও জনসচেতনতামূলক একটি ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. সোহেল মাহমুদ। দুর্গাপূজার আগে, সম্ভাব্য ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত পূজা চলাকালে, বিজয়া দশমিতে প্রতিমা বিসর্জনের দিন এবং বিসর্জন পরবর্তী আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গৃহীত কড়া নিরাপত্তা প্রস্তুতির নানা দিক তুলে ধরেন তিনি।

পরে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জামালপুর জেলা শাখার সভাপতি প্রদীপ কুমার সোম ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ রায় শঙ্করসহ জেলার সাত উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ, জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা, জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ জলিল, জামালপুর মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সাংবাদিক মো. জাহাঙ্গীর আলম, মোখলেছুর রহমান লিখন, ফজলে এলাহী মাকাম প্রমুখ।

সভায় পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমরা সব সময় জনতার পাশে আছি। বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্ন নিয়ে, যে একটি অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার চেতনা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। সেই জায়গা থেকে আমরা যেন বিচ্যুত না হই। আমাদের সংস্কৃতির সহজিয়া ধর্মই হলো যে যার মতো করে যার যার ধর্ম সুন্দর পরিবেশে পালন করবো।

তিনি আরও বলেন, এবারের দুর্গাপূজা উদযাপন সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। টহল পুলিশ, আনসার সদস্য ছাড়াও এবার প্রতিটি পূজামণ্ডপে সার্বক্ষণিক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। প্রতিটি পূজামণ্ডপে বসানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা। পূজা উপলক্ষে একটি কন্ট্রোলরুমও খোলা হচ্ছে। কথা একটাই আমরা সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশের মধ্য দিয়ে সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব নিয়ে দুর্গাপূজা পার করবো। অনেকেই অনেক কিছু নিয়ে গুজব ছড়াতে পারে। দুর্গাপূজায় গুজবের দিক থেকে আমরা সতর্ক থাকবো। পূজা মানেই প্রার্থনা। তাকে উৎসবে রূপান্তরিত করতে গিয়ে যেন পূজার তাৎপর্য নষ্ট না হয়, সেই দিকে সবাইকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান পুলিশ সুপার।

মতবিনিময় সভায় পূজা উদযাপন পরিষদ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ রায় শঙ্কর জানান, এবার জামালপুর জেলার সাত উপজেলায় ২০৯টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। এর মধ্যে জামালপুর সদরে সবচেয়ে বেশি ৬৩টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। দুর্গাপূজার নিরাপত্তা ইস্যুতে পুলিশ সুপারের বেশকিছু কার্যকর পদক্ষেপে আমরা খুশি। রাষ্ট্রের আইন সবাইকে মানতে হবে। আমরা সম্প্রীতি বজায় রেখে দুর্গাপূজা উদযাপন করতে চাই। সবাই সহযোগিতা করলে আশা করি আসন্ন দুর্গাপূজা নিয়ে জামালপুরে কোন সমস্যা হবে না।