জামালপুরে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে আনসার ও ভিডিপির প্রশংসনীয় ভূমিকা

:: জাহাঙ্গীর সেলিম ::
গ্রাম প্রতিরক্ষা এবং মানুষের আর্থ–সামাজিক উন্নয়নে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে থাকা আনসার ও ভিডিপির সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রচার-প্রচারণার অভাবে তাদের অবদানগুলো সাধারণের আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। প্রচার যেমন প্রতিটি কাজকে আমজনতার কাছে প্রকাশিত করে তেমনি প্রেরণা দেয় কাজের গতিকে বেগবান করে তুলতে।

দেশের অন্যতম বৃহৎ অসামরিক সুশৃঙ্খল বাহিনী আনসার ও ভিডিপি। তারা অন্যান্য কাজের পাশাপাশি দেশের অন্যতম সামাজিক ব্যধি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে জামালপুরে বহুমাত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। গ্রামে গ্রামে উদ্বুদ্ধমূলক কাজের পাশে বাল্যবিয়ের খবর পাওয়ার সাথে সাথে নিজেদের উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করে থাকে। সম্প্রতি সরিষাবাড়ী উপজেলায় ৩টি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয় সরাসরি ভূমিকা পালন করে।

সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রশিক্ষক রাজু রায়হান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে আমরা চেইন অফ কমান্ড মেনে বাল্যবিয়ের তথ্য আনসার ও ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্টক মহোদয়কে জানাই। তার মাধ্যমে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা সহকারী কমিশনার ভূমি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সহায়তা নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনী প্রক্রিয়ায় বাল্যবিয়ে বন্ধ করে থাকে।

আনসার ও ভিডিপি কমান্ড্যান্ট মো. মিজানুর রহমান বলেন, বাহিনীর মহাপরিচালক মহোদয়ের নির্দেশনায় সমাজ থেকে মাদক, জুয়া, নারী, শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের পাশাপাশি বাল্যবিয়ে বন্ধ করা আমাদের অন্যতম একটি সামাজিক কাজ। তিনি বলেন, নবাগত জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদ মহোদয়ের দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপের ফলে বাল্যবিয়ে বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে।

তথ্য সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি আনসার ও ভিডিপির তথ্য পেয়ে সরিষাবাড়ী পৌরসভার শিমলাপল্লী, পোগলদিঘা ইউনিয়নের উত্তর বয়ড়া গ্রামে এবং কামরাবাদ ইউনিয়নে বীরবড়বাড়ীয়া গ্রামে স্থানীয় প্রশাসন বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে সক্ষম হয়। প্রতিটি উপজেলা আনসার ও ভিডিপি সমানতালে বাল্যবিয়ে বন্ধে কাজ করছে বলে বাহিনী সূত্র জানায়।

গত জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে আনসার ও ভিডিপির ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন জেলা প্রশাসক ইমরান আহমেদ। তিনি বলেন, প্রত্যেক সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইচ্ছে করলেই বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে অবদান রাখতে পারে। একটু সদিচ্ছা থাকলেই সামাজিক ব্যধি বালবিয়ের অভিশাপ থেকে সমাজকে মুক্ত করা সম্ভব।

উল্লেখ্য, জামালপুরে বাল্যবিয়ের হার বর্তমানে ৬৬ ভাগ। একসময় যা ছিলো প্রায় ৮২ ভাগ। সরকারি, বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগের পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতন করা এবং বিদ্যালয়ভিত্তিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা জরুরি বলে মনে করেন সুধীমহল।