বকশীগঞ্জে এলজিইডির রাস্তা পুনর্বাসনে দুর্ভোগ লাঘব, বদলে গেছে জীবনযাত্রার মান!

বকশীগঞ্জে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে মেরুরচরের রাস্তাটি পুনর্বাসনের ফলে দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু, বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুরের বকশীগঞ্জে এলজিইডির একটি রাস্তা পুনবার্সনের ফলে ৩০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে। এতে করে ওই এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন হয়েছে। একারণে বদলে গেছে গ্রামীণ আর্থ সামাজিক ব্যবস্থায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ভয়াবহ বন্যায় বকশীগঞ্জ মালিবাগ-মেরুরচর রাস্তাটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যায় ৬ কিলোমিটার রাস্তার প্রায় ৫ কিলোমিটার জুড়ে রাস্তাটি ৮০ শতাংশ খানা খন্দ ও ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়। রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ২০টি গ্রামের মানুষের প্রায় ৩০ হাজার মানুষের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ এই রাস্তা ব্যবহার করে থাকেন।

এই রাস্তা দিয়ে বড় ধরনের যানবাহনসহ অটোরিকশা ও অটো ভ্যান, মোটরসাইকেল চালানো খুবই কষ্টদায়ক হয়ে পড়ে। মেরুরচর থেকে বকশীগঞ্জ উপজেলা শহরে আসতে যেখানে সময় লাগত ১০ মিনিট সেখানে রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সময় লাগত ৪০ থেকে ৫০ মিনিট। ফলে এই এলাকার স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে মেরুরচর ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ বা উপজেলা শহরে গিয়ে সরকারি দপ্তর গুলোতে সেবা নিতে যাওয়া সেবা প্রার্থীদের চরম বিপাকে পড়তে হয়। একদিকে যেমন তাদের সময় ক্ষেপণ হত অন্যদিকে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার কওে গন্তব্যে যেতে বেশি অর্থ খরচ করতে হত। শুধু তাই নয় এই এলাকার কৃষকদের তাদের উৎপাদিত কষ্টার্জিত ফসল বাজারজাত করতে খুবই অসুবিধায় পড়তে হত। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে উৎপাদিত ফসল গুলো মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করতে হত।

বকশীগঞ্জে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে মেরুরচরের রাস্তাটি পুনর্বাসনের ফলে দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

মেরুরচর এলাকার মানুষের এই দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বকশীগঞ্জ আরএইচডি (মালিবাগ মোড়) হতে মেরুরচর ইউপি পর্যন্ত রাস্তাটি পুনর্বাসনের উদ্যোগে নেন। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বকশীগঞ্জ এলজিইডির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে সি.এ.এফ.ডি.আর.আই.আর.পি (আম্ফান) প্রকল্পের আওতায় ৬ দশমিক ৬৫০ কি.মি রাস্তাটি পুনর্বাসন করা হয়। এই রাস্তাটি পুনর্বাসনের পর পাল্টে গেছে এলাকার জীবনযাত্রার মান। দুর্ভোগ লাঘব হয়ে মানুষের মধ্যে আশার আলো সঞ্চয় হয়েছে। কর্মজীবী, পেশাজীবী, শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে তাদের কাজে যেতে পারেন আবার ফিরে আসতে পারেন। কৃষকরা খুব সহজেই যেকোন যানবাহন ব্যবহার করে তাদের ফসল গুলো হাট-বাজারে নিতে পারেন। ফলে মানুষের যেমন লাঘব হয়েছে দুর্ভোগ তেমনি আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ঘটেছে।

এবিষয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. শামছুল হক বলেন, মেরুরচর ইউনিয়ন একটি চর এলাকা ও নদী বেষ্টিত ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের মানুষকে নানা কারণে সময়ে অসময়ে দুর্যোগে পড়তে হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে রাস্তাটি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার পর মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে যাওয়ায় আম্ফান প্রকল্পের আওতায় রাস্তাটি পুনর্বাসন করা হয়েছে। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিবর্তন হওয়ায় এই এলাকার মানুষের জীবনমানেরও পরিবর্তন হয়েছে।

জামালপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সায়েদুজ্জামান সাদেক জানান, এই রাস্তাটি পুনর্বাসনের কারণে মানুষের যেমন দুর্ভোগ লাঘবের পাশাপাশি আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ঘটেছে এবং কৃষি পণ্য পরিবহনের দুয়ার খুলে গেছে।