প্রেমিকাকে পতিতালয়ে বিক্রির অভিযোগে প্রতারক প্রেমিক র‌্যাবের জালে

গ্রেপ্তার লোকমান মিয়া। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম: শেরপুরের শ্রীবরদীর লঙ্গরপাড়া গ্রামের এক তরুণীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে পার্শ্ববর্তী জামালপুর শহরের দয়াময়ী মোড় এলাকার পতিতালয়ে বিক্রির অভিযোগে লোকমান মিয়া (২৩) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৪। ১৪ আগস্ট এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে সংস্থাটি। এর আগে ১৩ আগস্ট রাতে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকার দক্ষিণখান থেকে প্রতারক লোকমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া লোকমান শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে।

র‌্যাব-১৪ জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিকুউজ্জামান বলেন, শ্রীবরদী উপজেলার লঙ্গরপাড়া গ্রামের ওই তরুণীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় ঝিনাইগাতী উপজেলার পাইকুড়া গ্রামের এক যুবকের সাথে। সংসারে বনিবনা না হওয়ায় প্রায় দুই বছর আগে ওই সংসার ভেঙে যায়। এরপর তরুণী বাবা-মায়ের সঙ্গে গাজীপুরে বসবাস করতেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে একই পোশাক কারখানায় কাজ করতো লোকমান। সে সুবাধে বাসায় আসা-যাওয়ার সূত্র ধরে তরুণীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে লোকমানের। বিষয়টি জানাজানি হলে তরুণীকে নানাবাড়ি শ্রীবরদী দক্ষিণ লঙ্গরপাড়ায় পাঠিয়ে দেয় তার বাবা-মা। এতে লোকমান ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে ওই তরুণীর সাথে যোগাযোগ করে। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভনে ফেলে গত ২০ জুন নানা বাড়ি থেকে তরুণীকে নিয়ে যায়। দিনভর নানা জায়গায় ঘোরাফেরা করে কৌশলে জামালপুরের পতিতালয়ে বিক্রি করে পালিয়ে যায় প্রতারক লোকমান।

স্কোয়াড্রন লিডার আশিকুউজ্জামান আরও বলেন, মেয়ে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পারিবারিক সম্মানের ভয়ে কাউকে না জানিয়ে গোপনে খুঁজতে থাকেন অভিভাবকেরা। একপর্যায়ে ৫ আগস্ট তরুণীর মায়ের মোবাইল ফোনে অজ্ঞাত নাম্বার থেকে ফোন আসে। ফোনটি রিসিভ করতেই ওই নাম্বার থেকে ‘আমাকে বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার শোনা যায়। তবে এসময় ঠিকানা বলতে পারেনি ভুক্তভোগী তরুণী। পরে গত ৯ আগস্ট শ্রীবরদী থানায় ভুক্তভোগী তরুণীর মা অভিযোগ দায়ের করেন।

আশিকুউজ্জামান জানান, ওই ঘটনার পর থেকে আসামি গ্রেপ্তার এড়ানোর লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় আত্মগোপনে ছিল। পরে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে র‌্যাবের একটি আভিযানিক দল ঢাকা বিমানবন্দর এলাকার দক্ষিণখান থেকে আসামিকে গ্রেপ্তার করে। আসামিকে শ্রীবরদী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ৯ আগস্ট শ্রীবরদী থানায় মামলা দায়ের করার পর ভুক্তভোগী ওই তরুণীকে উদ্ধার করে শ্রীবরদী থানা পুলিশ।