আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা রাখতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকলকে আওয়ামী লীগের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তাঁর দল দেশবাসীকে একটি উন্নত ও সুন্দর জীবন দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি আরো বলেন, নৌকায় ভোট দিয়ে দেশবাসী স্বাধীনতা পেয়েছিল। নৌকায় ভোটের কারণে আজ ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষ ঘর পেয়েছে। তাই, আমি বলতে চাই- আওয়ামী লীগের প্রতি সবাইকে বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে হবে।’

দারিদ্র্য বিমোচনে প্রধানমন্ত্রী তাঁর স্বপ্নের আশ্রায়ণ প্রকল্পের আওতায় ৯ আগস্ট আরও ১২টি জেলা ও ১২৩টি উপজেলার গৃহহীন ও ভূমিহীনদের বিনামূল্যে বাড়ি বিতরণের ঘোষণা দেয়ার সময় এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে অনুষ্ঠনে যোগ দিয়ে বলেন, জনগণ তাঁর দল আওয়ামী লীগকে বারবার ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনায় তাঁর সরকারের অধীনে দেশ আর্থ-সামাজিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত করতে এবং দারিদ্র্যের হার ৪১ থেকে ১৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। কারণ তাঁর দল ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছে সমস্ত মানবসৃষ্ট ও প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর জনগণের ভোটের অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। তাঁর দল সংগ্রামের মাধ্যমে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এরশাদ ও খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ভোট কারচুপির মাধ্যমে সংসদে এনেছিলেন। সামরিক একনায়ক জিয়া খুনিদের বিচার ঠেকাতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে তাদের বিদেশে পোস্টিং দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, কেউ যাতে আবার ভোট চুরি করতে পারবে না সেজন্য আমরা একটি ডিজিটাল ভোটার তালিকা তৈরি করেছি। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াত চক্র জনগণের কল্যাণে কিছুই করেনি বরং লাগামহীন দুর্নীতির মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য গড়েছে।

তিনি বলেন, সেই কায়েমী গোষ্ঠী (বিএনপি-জামায়াত) এখনও ব্যক্তি-স্বার্থ হাসিলে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে জনগণকে বন্দী করার চেষ্টা করছে-যেটি তারা ২০১৩-১৪ সালে সেই সময়ের জাতীয় নির্বাচন স্থগিত করার লক্ষ্যে শুরু করেছিল।

শেখ হাসিনা দেশবাসীকে তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন ‘আমাদের একটি বিরোধী দল আছে যারা শুধুমাত্র সাধারণ মানুষকে হত্যা করে, তাদের ব্যক্তি-স্বার্থ হাসিলের জন্য সন্ত্রাস ও অগ্নিসংযোগ করে।’

শেখ হাসিনা-আ’লীগ-আস্থা প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জনগণকে গৃহহীণ ও ভূমিহীন মুক্ত রাখার সরকারি উদ্যোগের সঙ্গে সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের কেউ যেন গৃহহীণ ও ভূমিহীণ না থাকে তা নিশ্চিত করা এবং অনেক ধনী লোক সরকারি উদ্যোগের সঙ্গে এগিয়ে আসতে পারে যাতে সমাজের কেউ অবহেলিত না থাকে।’

প্রধানমন্ত্রী কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় বেসরকারি উদ্যোগে ৬৫টি গৃহহীণ ও ভূমিহীণ পরিবারকে একটি আবাসন প্রকল্পে পুনর্বাসিত করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের দ্বিতীয় রাউন্ডের চতুর্থ ধাপে ১২টি জেলা ও ১২৩টি উপজেলাকে গৃহহীণ-ভূমিহীণ মুক্ত ঘোষণা করার ফলে সারাদেশে ২১টি জেলা ও ৩৩৪টি উপজেলা গৃহহীণ ও ভূমিহীণ মুক্ত হলো।

শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, ‘আমি আজ ১২টি জেলা ও ১২৩টি উপজেলাকে গৃহহীণ-ভূমিহীণ মুক্ত ঘোষণা করছি এবং যারা জমিসহ বাড়ি পেয়েছেন তাদেরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এইসব বাড়ি আপনাদের মর্যাদা বাড়াতে সাহায্য করবে’।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যাদের জন্যে তাঁর সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন সেসব মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের প্রচেষ্টা দেখে তাঁর আত্মা শান্তি পাবে।

যারা বাড়ি পেয়েছেন তাদের বাড়ির ভিতরে এবং আশপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে এবং বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বেশিরভাগ সুবিধাভোগিসহ স্থানীয় জন প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা এবং সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে মত বিনিময় করেন।

সুবিধা ভোগিরা খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার আওতাধীন বারাসত সোনার বাংলা পল্লী আশ্রয়ণ প্রকল্প, পাবনার বেড়া উপজেলার আওতাধীন চাকলা আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আমানউল্লাহপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

এ সময়ে শেখ হাসিনা ঘরের সুবিধাভূগি স্বামীর অমানবিক নির্যাতনে অন্ধ মহিলা লিলি বেগমের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন।

প্রধানমন্ত্রী পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার দৃষ্টি শক্তিহীন মহিলার চিকিৎসার যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

অনুষ্ঠানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ওপর একটি ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।সূত্র:বাসস।