তীরুথায় ছাত্রী উত্ত্যক্তকারীকে একমাসের কারাদণ্ড দিলেন ইউএনও

ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করা এবং প্রতিবাদ করায় ছাত্রীর বাবাকে মারধর করার অভিযোগে জামালপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে এক বখাটেকে একমাসের কারাদণ্ড দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ৬ জুলাই রাত সাড়ে ৯টা দিকে জামালপুর পৌরসভার ফুলবাড়িয়া জহুরুলের ফিসারি এলাকায় ওই ছাত্রীর বাবা তিরুথা নিবাসী মানিক মিয়া নিজ অটোরিকশা চালিয়ে শহর থেকে বাড়ি ফিরার পথে হামলার শিকার হন।

উত্ত্যক্তকারী ফিরুজ

আহত মানিক জানান, একই দিন সন্ধ্যায় উত্ত্যক্তকারী ফিরোজ ও তার দুই সঙ্গী জহুরুলের ফিসারি সংলগ্ন সিংড়ি পুল এলাকায় গেলে তারা গাড়ি থেকে নামিয়ে তাকে উপর্যুপরি মারধর করতে থাকে। গাড়ির যাত্রীরা আপ্রাণ চেষ্টা করেও হামলার হাত থেকে তাকে রক্ষা করতে পারেননি। একপর্যায়ে ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে দুই হামলাকারী পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও প্রধান অভিযুক্ত ফিরোজ জনতার হাতে আটক হয়। ফিরোজকে নিরাপদে বামুনপাড়া বিট পুলিশিং অফিসে নিয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী শাহনেওয়াজকে খবর দিলে এসআই মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বিট অফিসে যান। পরে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী হাকিম সরকার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ঘটনার বিবরণ জানিয়ে পদক্ষেপ নেবার অনুরোধ জানান। তার নির্দেশে জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও প্রথম শ্রেণির নির্বাহী হাকিম লিটুস লরেন্স চিরান বামুনপাড়ায় গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করা এবং হামলা ঘটনার সত্যতা পেয়ে ও ফিরোজ দোষ স্বীকার করায় তাকে একমাসের কারাদণ্ড দেন। পুলিশ ৭ জুলাই ফিরোজকে জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ফিরোজ (২৩) জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের দেওয়ানু মিয়ার ছেলে। তিনি এক বছরের অধিক সময় ধরে তিরুথা এলাকায় বিভিন্ন মুরগির খামারে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। কাজে ফাঁকি দিয়ে অধিকাংশ সময় তিরুথা সত্যপীর উচ্চবিদ্যালয় এলাকায় গিয়ে ঘুরঘুর করতেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিচারের রায় দিতে গিয়ে ইউএনও ও নির্বাহী হাকিম লিটুস লরেন্স চিরান অভিযুক্তকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বয়সের বিবেচনায় এবং ভালো হওয়ার সুযোগ দিয়ে দণ্ডের মাত্রা কমানো হয়েছে। কারাভোগ শেষে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুনভাবে জীবন গড়ার চেষ্টা করতে হবে। এ সময় বাদী ও অভিযুক্ত ফিরোজের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের রায়ে উভয় পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে।