জামালপুরে হিজড়াদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে মতবিনিময় সভা

জামালপুরে হিজড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমদ।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: বিএসআরএম এর আর্থিক সহায়তায় উন্নয়ন সংঘের বাস্তবায়নাধীন সমাজের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী হিজড়াদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জামালপুর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমদ। ১৮ এপ্রিল হিজড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক প্রকল্পের আওতায় পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম।

সভায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশাসন ও অর্থ মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেডকোয়ার্টার জাহিদুল ইসলাম খান, উন্নয়ন সংঘের সহকারী পরিচালক কর্মসূচি মুর্শেদ ইকবাল, প্রকল্প ব্যবস্থাপক লিটন সরকার, প্রকল্প কর্মকর্তা আরজু আহম্মেদ, সিঁড়ি সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি আরিফা ইয়াসমিন ময়ুরী, সহসভাপতি দেলু প্রমুখ।

সভায় জামালপুর সদর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ থানার পুলিশ কর্মকর্তা, হিজড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, উন্নয়ন সংঘের প্রতিনিধিসহ ৩০ জন অংশ নেন। অনুষ্ঠানে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক লিটন সরকার।

পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমদ বলেন, সরকারের পাশাপাশি ট্রান্সজেন্ডারদের উন্নয়নে উন্নয়ন সংঘ কাজ করছে জেনে ভালো লাগছে। সমাজের সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত এ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে উন্নয়ন সংঘের কাজে এবং হিজড়াদের উন্নয়নে বিএসআরএম এর মতো শিল্প প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসায় আমরা খুশি। সম্মিলিতভাবে কাজ করলে ট্রান্স জেন্ডারদের সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। তিনি নিজেদের মধ্যে কোন্দল, ঝগড়া বিবাদ না করে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

জানা যায়, উন্নয়ন সংঘের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন হিজড়াদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জামালপুরে প্রাথমিকভাবে ২৫০ জন হিজড়াদের প্রকল্পের উপকারভোগী হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৪ জন কর্মী নিয়োগ ছাড়াও ফোকাল পারসন ও হিসাব রক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ হিজড়াদের চলমান আয়ের উৎস এবং কর্মসংস্থানের জন্য বিদ্যমান সুযোগগুলো চিহ্নিত করে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে বলে আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানান। এ প্রকল্পের আওতায় তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে চাহিদা নিরুপণ নিশ্চিত করে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা হবে। তাদের মাঝে সহজশর্তে ঋণ বিতরণসহ শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি ও অন্যান্য সুবিধা প্রদানের চিন্তা করা হবে। সরকারিভাবে আবাসন সুবিধা, পরিবারে তাদেরকে সংযুক্তি করা, সরকারি ভাতা নিশ্চিত করা, বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করাসহ উন্নয়নের মূলস্রোতধারায় সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে তাদের সম্মান ও মানবাধিকার সুরক্ষা করা হবে।