সুপেয় পানির সংকটে শেরপুরের ১২ গ্রামের ৮ হাজার মানুষ

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম: শেরপুর সীমান্তের দুটি ইউনিয়নের ১২টি গ্রামে দেখা দিয়েছে তীব্র খাবার পানির সংকট। স্থানীয়রা বলছেন, বিশুদ্ধ খাবার পানি না পেয়ে তারা পাহাড়ী ঝর্ণা, পুকুর ও কুয়ার পানি পান করে জীবন ধারণ করছেন। এর ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রায় ৮ হাজার মানুষ। তাদের অভিযোগ, ময়লাযুক্ত পানি ব্যবহারের ফলে তারা পেটের সমস্যাসহ নানা ধরণের রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। অন্যদিকে সংকট সমাধানে আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা।

ভুক্তভোগী একাধিক ব্যক্তি জানান, বর্তমানে শুস্ক মৌসুম চলমান থাকায় পাহাড়ী অঞ্চলের ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এর ফলে জেলার শ্রীবরদীর রাণীশিমুল ইউনিয়নের মালাকুচা, হালুয়াহাটি, বালিজুড়ি, খাড়ামুড়াসহ ৬টি এবং ঝিনাইগাতীর কাংশা ইউনিয়নের তাওয়াকুচা, গজনী, নওকুচি, পানবরসহ ৬টি গ্রামের মানুষ গত ৮-১০দিন যাবত তীব্র পানির সংকটে পড়েছেন।

মালাকুচা গ্রামের আব্দুল হক বলেন, তার এলাকার কোন টিউবওয়েল থেকে পানি উঠছে না। যে কারণে খাবার পানির সংকটে পড়েছেন তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা। তাই বাধ্য হয়ে পাহাড়ী ঝর্ণা, পুকুর ও কুয়ার পানি ব্যবহার করছেন তারা।

আব্দুল হক জানান, তার মত আরো অনেকেই এভাবে খাবার পানির সংস্থান করছেন। বর্তমানে সুপেয় পানির অভাবে শেরপুরের ১২টি গ্রামের প্রায় ৮হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।

নওকুচি গ্রামের রহিমা বেগম বলেন, ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি ব্যবহারের কারণে এলাকার অনেকেই পেটের সমস্যাসহ নানা ধরণের রোগব্যাধীতে আক্রান্ত হচ্ছেন। তিনি শীঘ্রই সুপেয় পানির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

বালিজুড়ি গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, এলাকায় সচ্ছল দু’একজন কৃষক বিদ্যুৎচালিত গভীর সাবমারসিবল পাম্প বসিয়েছেন। এসব পাম্প থেকে পানি নেওয়ার জন্য দূর দুরান্ত থেকে লোকজন এসে জগ, বালতি, কলস ও বোতল ভরে পানি নিয়ে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ পুকুরের পানি ফুটিয়ে পান করছেন। এছাড়া অনেকে ঝর্ণার পানিতে ফিটকারি ব্যবহার করে সংকট মোকাবেলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

নজরুল ইসলাম জানান, একেবারে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর হত দরিদ্র মানুষজন ঝর্ণা, পুকুর ও কুয়ার পানি সরাসরি ব্যবহার করছেন। যে কারণে রোগ বালাইয়ে তারা বেশী আক্রান্ত হচ্ছেন।

অন্যদিকে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাথে পানি সংকটের বিষয়টি আলোচনা করে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শ্রীবরদীর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান।