খালেদা, তারেকের নেতৃত্বেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা : শেরপুরে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তথ্য প্রতিমন্ত্রী
সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বলেছেন, খালেদা আর তারেক জিয়ার নেতৃত্বেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছে। ২০ আগস্ট বিকালে শেরপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে করোনাকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তার প্রণোদনার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মুরাদ হাসান বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার হয়েছে, জাতীয় চার নেতা হত্যাকান্ডের বিচার কাজ চলমান। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা খালেদা আর তারেক জিয়ার নেতৃত্বেই হয়েছে। এর বিচার কাজও চলমান। কিন্তু মূল খুনির বিচার এখনও হয়নি। এ সময় তিনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসাবে জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ইন্দিরা গান্ধী, মহাত্মা গান্ধী ও রাজীব গান্ধী আততায়ীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। কিন্তু তাদের বংশকে নির্বংশ করা হয়নি। কাপুরুষ জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
এ সময় তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এভাবে কেউ কাউকে হত্যা করে। তার উদ্দেশ্য ছিল- এই রক্ত কোন দিন যেন বাংলার মাটিতে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। কেউ জয় বাংলা বলতে না পারে, বঙ্গবন্ধুর নাম কেউ উচ্চারণ করতে না পারে। এছাড়া ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ববাসী জানতে না পারে আর ওই ভাষণ কেউ যেন বাজাতে না পরে এটাই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য।
মুরাদ হাসান বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা এই খুনির মরণোত্তর বিচার বাংলার মাটিতে দেখতে চাই। আর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। এর জন্য রাষ্ট্রপতি, নির্বাহী প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিচার বিভাগ, আইন প্রণেতা ও এই রাষ্ট্রের সংবিধান আছে। আমি এই খুনির বিচার চাইলাম আর এ কথা উচ্চারণ করতেই থাকবো।
জাতির পিতার হত্যাকান্ডের মাস্টার মাইন্ড ছিলেন জিয়াউর রহমান উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এই খুনির মুখোশ আমাদের সন্তানদের সামনে উন্মোচন করতেই হবে। বেগম খালেদা জিয়া কে, তার স্বামী কে, তাকে হত্যা (জিয়াউর রহমান) করা হলো আর উনি (খালেদা জিয়া) পাশের রুমে ঘুমালেন মহা আনন্দে, মহা আরামে। আর খালেদা জিয়া হঠাৎ করে হয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। জিয়া হত্যাকান্ডের প্রধান কুশিলব খালেদা।
এ সময় তিনি খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এফডিসি’র নাইকা হওয়ার কথা, হয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। মেট্রিক ফেল, আট সাবজেক্টে ফেল দুই সাবজেক্টে পাশ। পাশ করলেন উর্দু আর অংকে। হলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
এসব ইতিহাস জানতে হবে আমাদের সন্তানদেরকে, ভবিষ্যত প্রজন্মকে উল্লেখ করে মুরাদ হাসান বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা, বঙ্গবন্ধু কন্যার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছেন তাদেরকে জানতে হবে। ইতিহাস না জানলে এ দেশ, জাতি ও রাষ্ট্র সঠিকভাবে পরিচালিত হবে না।
তিনি বলেন, তালেবানরা আফগানিস্তান দখল নেয়ায় পাকিস্তানিরা বেজায় খুশি। এ নিয়ে স্যোশাল মিডিয়ায় ঝড় বয়ে যাচ্ছে। আর এদেশকে পাকিস্তান বানাতে যারা স্বপ্নে বিভোর ছিলো তারাও খুশি। ওইসব উন্মাদনা স্যোশাল মিডিয়া পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকবে।
এ দিন শেরপুর জেলা প্রশাসন ও প্রেসক্লাব যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন শেরপুর সদর আসনের এমপি ও হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক।
শেরপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মেরাজ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী চন্দন কুমার পাল, পৌর মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সভাপতি শরিফুর রহমান।
এ দিন জেলার পাঁচ উপজেলায় কর্মরত ৪৬ জন গণমাধ্যমকর্মীকে ১০ হাজার করে মোট চার লাখ ৬০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।