জামালপুরের ভাষাসৈনিক ও নারী জাগরণের পথিকৃত জান্নাত আরা সোবহান আর নেই

প্রয়াত ভাষা সৈনিক জান্নাত আরা সোবহান।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের ভাষাসৈনিক ও নারী জাগরণের পথিকৃত জামালপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক এবং জামালপুর সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ভাষাসৈনিক প্রয়াত আইনজীবী সৈয়দ আব্দুস সোবহানের সহধর্মিনী জান্নাত আরা সোবহান আর নেই। তিনি ৬ জুন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকায় ধানমন্ডিতে তার তৃতীয় কন্যা সৈয়দা রুমেনা সোবহানের বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

পারিবারিক সূত্র জানায়, ভাষাসৈনিক জান্নাত আরা সোবহানের বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি এক ছেলে ও পাঁচ মেয়েসহ অনেক আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। ছয় সন্তানের মধ্যে দুই মেয়ে শাহীনা সোবহান মিতু ও শামীমা সোবহান সেতু পেশায় চিকিৎসক এবং ছেলে জাহিদ সোবহান জয় একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। বাকি উচ্চ শিক্ষিত তিন মেয়ে গৃহিনী।

প্রয়াত ভাষা সৈনিক জান্নাত আরা সোবহান ছিলেন জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের প্রথম মুসলিম নারী গ্রাজুয়েট। বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনের সময় তৎকালীন জামালপুর মহকুমা শহরে তিনি বেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। জামালপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি জামালপুরের প্রগতিশীল যেকোন আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত থেকে নারী অধিকার ও নারী শিক্ষার প্রসারে অবদানসহ আমৃত্যু বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ জেলা শাখা, জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থা ও জাতীয় মহিলা সংস্থার সভানেত্রী এবং লেডিস ক্লাব ও জামালপুর জেলা গার্লস গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সহ-সভানেত্রী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে পরিবারের আত্মীয় স্বজন, গুণগ্রাহী ও শহরের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মকর্তা, সদস্যসহ সকলের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।

প্রয়াত জান্নাত আরার একমাত্র ছেলে সিটি ব্যাংক কর্মকর্তা শোকার্ত জাহিদ সোবহান জয় বাংলারচিঠিডটকমকে জানান, তার মায়ের মরদেহ হিমায়িত গাড়িতে করে ঢাকা থেকে জামালপুর শহরের আমলাপাড়ায় নিজ বাসায় আনা হয়। আজ রবিবার (৬ জুন) রাতে এশার নামাজের পর প্রয়াত জান্নাত আরা সোবহানের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে। এরপর জামালপুর পৌরসভার বেলটিয়া এলাকায় গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।