বকশীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নৈশপ্রহরী আশরাফের মানবেতর জীবনযাপন

নৈশপ্রহরী মো. আশরাফ আলী

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার কার্যালয়ের নৈশপ্রহরী মো. আশরাফ আলী মানবেতর জীবন-যাপন করছে। দৈনিক মজুরি ৬০ টাকা হাজিরায় চাকরি করেও বেতন পাচ্ছেন না ২৭ মাস ধরে। ফলে অভাব-অনটন ও বেতন না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব মো. আশরাফ আলী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বকশীগঞ্জ পৌর শহরের চরকাউরিয়া ভাটিয়া পাড়া গ্রামের মো. আশরাফ আলী (৫৫) ১৯৯৫ সালে দৈনিক ২৫ টাকা মজুরির ভিত্তিতে নৈশপ্রহরী হিসেবে বকশীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে যোগদান করেন।

২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সারা বাংলাদেশের ৪০০টি সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের নৈশপ্রহরীদের দৈনিক মজুরি ২৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা করেন নিবন্ধন পরিদপ্তর। তবে এখন পর্যন্ত ৬০ টাকা হাজিরাই রয়ে গেছে।

বর্তমান সময়ে এতো কম মজুরি দিয়ে কোনো পরিবারই চলতে পারবে না। কিন্তু অসহায় আশরাফ আলী পরিবারের কথা চিন্তা করে দিনের পর দিন খেয়ে না খেয়ে অফিস পাহারা দিয়েছেন। তার উপর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে গেছেন।

নৈশপ্রহরীর চাকরি করে যে টাকা পাওয়া যায় তা দিয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মত অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তার। সংসারের অভাব অনটনের কারণে ছেলে-মেয়েদের বেশিদূর পর্যন্ত পড়াশুনাও করাতে পারেন নি।

বর্তমানে ২৭ মাস ধরে ৬০ টাকা হাজিরার বেতনও পাচ্ছেন না মো. আশরাফ আলী। ২৭ মাস ধরে বেতন না পেয়ে পরিবারের ৬ সদস্য নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন মো. আশরাফ আলী।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মো. আশরাফ আলী জানান, নিবন্ধন পরিদপ্তর থেকে দৈনিক ৬০ টাকা মজুরি দেওয়া হলেও ২৭ মাস ধরে তাও পাচ্ছি না। ফলে অনেক কষ্টে দিনানিপাত করছি।

তিনি মজুরির টাকা বৃদ্ধি ও বোনাস চালু করা সহ নিয়মিত তা পরিশোধের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান। একই সঙ্গে সকল নৈশপ্রহরীদের সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি। দৈনিক হাজিরা না পাওয়ার বিষয়টি জেলা নিবন্ধন কর্মকর্তাকে জানানো হলেও কোন সুরাহা পাওয়া যায় নি।

এ ব্যাপারে বকশীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার মো. জাকির হোসেনের সাথে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায় নি।