মিল্লাত-শামীমসহ ৮ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠি ডটকম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে আটজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। তাদের মধ্যে দুটি আসনে বিএনপি দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী দুই প্রভাবশালী প্রার্থীও রয়েছেন।

যাচাই-বাছাই শেষে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর ২ ডিসেম্বর তার কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জেলার পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৪৯ জন প্রার্থীর মধ্যে বৈধ ৪১ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে বাতিল হওয়া আটজন প্রার্থীর মধ্যে দুটি আসনে বিএনপি দলীয় প্রভাবশালী দু’জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। তারা হলেন- জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ) আসনে বিএনপির মনোনয়ন চিঠি পাওয়া দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য এম. রশিদুজ্জামান মিল্লাত এবং জামালপুর- ৪ (সরিষাবাড়ী) আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীমের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা আহমেদ কবীর বাংলারচিঠি ডটকমকে জানান, আয়ের তথ্য গোপন করার দায়ে দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়ার কারণে এম. রশিদুজ্জামান মিল্লাতের এবং সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে লাভজনক পদে নিয়োজিত থাকার দায়ে মো. ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীমের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দিলেও তা যথাযথভাবে করা হয়নি এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তা গৃহীত হয়নি বলেও রিটার্নিং কর্মকর্তা তার আদেশে উল্লেখ করেছেন।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা বিভিন্ন কারণে আরো যে ছয়জনের মনোনয়নপত্র বাতিলের আদেশ দিয়েছেন তারা হলেন- আয়-ব্যয়ের তথ্য না থাকায় জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রার্থী মো. মাসুম বিল্লাহ, ঋণ খেলাপি হওয়ায় গণফোরামের প্রার্থী নঈম জাহাঙ্গীর এবং শতকরা এক ভাগ ভোটার সংযুক্ত সমর্থকদের স্বাক্ষর জাল করার দায়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শফিকুর রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। জামালপুর- ৪ (সরিষাবাড়ী) জাতীয় পার্টির (এরশাদ) প্রার্থী সংসদ সদস্য মো. মামুনুর রশিদ তার হলফনামায় বাৎসরিক আয়, নির্বাচনী ব্যয়ের উৎস ও স্বাক্ষর না করায়, জামালপুর-৫ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলীর দলীয় মনোনয়নের চিঠি না থাকায়, জাতীয় পার্টির প্রার্থী (এরশাদ) মো. কাজী নজরুল ইসলামের দলীয় মনোনয়নের চিঠি না থাকায় এবং শতকরা ১ ভাগ ভোটার সংযুক্ত তালিকা না জমা দেওয়ায় তার মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে এম. রশিদুজ্জামান মিল্লাতের কাছে জানতে চাইলে তিনি বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, ‘দুদকের মামলায় আপিল করায় আমার সাজা মওকুফ হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে এ বিষয়ে আমি আপিল করবো। আশা করি আমি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবো।’

এ আসনে তিনি তার ছেলে মো. শাহাদৎ জামানকে মনোনয়নপত্র দাখিল করিয়েছেন। ২ ডিসেম্বর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যাচাই বাছাইয়ে শাহাদৎ জামানের মনোনয়নপত্র টিকে গেছে। শেষ পর্যন্ত আপনি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলে আপনার ছেলের ব্যাপারে দলীয় প্রতীক ধানের শীষ পেতে কতটুকু আশাবাদী এ প্রসঙ্গে এম. রশিদুজ্জামান মিল্লাত বলেন, ‘যদি আমি আসতেই না পারি তাহলে ইনশাল্লাহ আমার ছেলেই ধানের শীষ প্রতীক পাবে।’ এ আসনে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন চিঠি পাওয়া তিনজনের মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সাবেক আইজিপি আব্দুল কাইয়ুমের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষিত হয়েছে।

অপরদিকে সরিষাবাড়ী আসনের বিএনপি দলীয় একক মনোনয়নপ্রত্যাশী মো. ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, ‘আমি গত ২৬ নভেম্বর ঢাকায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে লিখিতভাবে সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। সেই পদত্যাগপত্র রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিয়েছি। কিন্তু এরপরও আমার মনোনয়নপত্র কেন বাতিল করা হলো আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। এ ব্যাপারে আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে আপিল করবো। আমি শতভাগ আশাবাদী যে আমার মনোনয়নপত্র টিকবে এবং নির্বাচনে অংশ নিতে পারবো।’